নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া পৌরসভার আটুয়া গ্রামে জোড়া লাগানো জমজ কন্যা শিশুর জন্ম দিয়েছেন আদরী বেগম (৩২) নামের এক গৃহবধু। তবে এভাবে জোড়া লাগানো দুই সন্তানের জন্মের পর পরিবারে আনন্দের পরিবর্তে নেমে এসেছে বিষাদের ছায়া। চরম অর্থাভাবে দুই সন্তানসহ প্রসূতি মায়ের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দিতে পারছেন না স্বজনরা। এর আগে সোমবার সকালে আটুয়া গ্রামের রিকশা চালক তাজেল হোসেনের স্ত্রী আদুরী বেগম জোড়া লাগানো দুটি বাচ্চা প্রসব করেন।
স্থানীয়রা জানান, ভূমিষ্ঠ শিশু দুটির দেহ পেছনের দিক থেকে কোমড়ের কাছে পরস্পর জোড়া লাগানো। তাদের উভয়ের একটি প্র¯্রাবের অঙ্গ ও মল ত্যাগের জন্য একটি পায়ুপথ রয়েছে। এ ছাড়া শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পৃথক রয়েছে। সন্তান প্রসবের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে প্রসূতি মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। খবর পেয়ে বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন তাদের বাড়িতে গিয়ে আর্থিক সহায়তা দিয়ে সোমবার দুপুরে তাদেরকে নাটোর সদর হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। বিকালে প্রসূতিসহ শিশু দুটির অবস্থার অবনতি ঘটে। কিন্তু দরিদ্র রিক্সা চালক পিতা তাজেল হোসেনের পক্ষে তাদের উন্নত চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
শিশু দুটির পিতা তাজেল হোসেন মঙ্গলবার জানান, আমি খবর পেয়ে আজই ঢাকা থেকে এসেছি। সন্তান হলে মানুষ খুশি হয়, কিন্তু আমি খুশির পরিবর্তে উল্টো আমার স্ত্রী-সন্তানকে বাঁচানো নিয়েই টেনশনে আছি। ডাক্তার বলেছে ঢাকা নিতে, কিন্তু ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানোর সাধ্য নেই আমার।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর দুলাল হোসেন জানান, প্রসূতিকে বারবার রক্ত দিতে হচ্ছে, আমিও দুই ব্যাগ জোগাড় করে দিয়েছি। আত্মীয়-স্বজনরা কিছু টাকা দিয়ে সহায়তা করলেও সেটা খুবই অপর্যাপ্ত। এ অবস্থায় তাদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. আজিজুল ইসলাম জানান, তাদের অবস্থা ভাল নয়, তবে আমরা সাধ্যমত সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি। তবে এমন বাচ্চাদের জন্য প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেয়ার মত ব্যবস্থা জেলা হাসপাতালে নেই। তাই তাদেরকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।