যশোরের কেশবপুরে আদালতে করা একটি মামলা তুলে নিতে অস্বিকার করায় শালিসী বৈঠকে উপস্থিত ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বরের প্রকাশ্য মদদে মামলার আসামিদের মারপিটে বাদীর ভাই মকছেদ আলীর আহত হয় এবং পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করে। মৃত্যুর ঘটনায় মকছেদ আলীর ভাই মোকাম সরদার বাদী হয়ে গত ২৪নভেম্বর -১৯ তারিখ বিদ্যানন্দকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনকে প্রধান ও সাবেক মেম্বর হাশেম আলীকে ২নং আসামি করে ১৮ জনের নামে যশোর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (কেশবপুর অঞ্চল) আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং মিস-০৫/১৯। ধারা-১৪৩/১৪৭/১৪৮/৩২৩/৩০২/৩৪/১১৪/দঃ বিঃ।
বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট মামলাটি ১০ কার্য্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য কেশবপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ ওসিকে নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান ও সাবেক মেম্বর ছাড়া বাকী আসামিরা হলেন উপজেলার জাহানপুর গ্রামের মঈনউদ্দিন সরদার,নকিম উদ্দীন,শহিদুল,মহিদুল,সাইফুল শরিফুল,আল আমিন, আকছেদ সরদার, মোঃ আলমগীর, মোঃ বিল্লাল, মহাসিন, মোঃ আতিয়ার, ইজ্জত আলী, আকবার আলী, মোঃ আক্তার ও আব্বাস আলী। গত ০৮-১০-১৯ তারিখ রাত অনুমান ১০ টার দিকে উপজেলার পরচক্রা গ্রামের মাঝের পাড়া তিন রাস্তার মোড়ে চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন ও সাবেক মেম্বর হাশেম আলীসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের উপস্থিতিতে পরচক্রা গ্রামের মৃত তায়েজ উদ্দীন সরদারের ছেলে মোকাম ও নিহত মকছেদসহ অন্যান্য ভাই ও আসামীদের নিয়ে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ মিমাংসার শালিসী বৈঠক বসে। শালিসের একপর্যায়ে চেয়ারম্যান আমজাদ ও আসামিরা একযোগে আসামীদের বিরুদ্ধে করা ১৪৪ ধারা মামলা ( নং-পি-২৫৪/১৯) তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করে। চাপের একপর্যায়ে বাদী মোকাম সরদার ,ভাই মকছেদসহ তার পরিবারের লোকজন মামলা তুলে নিতে অস্বিকার করায় চেয়ারম্যান ও সাবেক মেম্বর হাশেম আলীর হুকুমে আসামিরা প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র ও লাঠি-সোঠা দিয়ে মোকাম ও মকছেদকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। স্থানীয় লোকজন তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করান।পরবর্তিতে মকছেদের অবস্থার অবনতি হলে ১৪ নভেম্বর তাকে যশোর কুইন্স প্রাঃ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাকে ১৫ নভেম্বর যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ডাক্তাররা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিলে আহত মকছেদকে বাড়ীতে আনা হলে ২ দিন পর তার মৃত্যু হয়।নিহতের ভাই মোকাম সরদার সাংবাদিকদের জানান, তার ভাই মকছেদকে শালিসের নামে পূর্ব-পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। স্থানীয়ভাবে বিচার না পেয়ে আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে হত্যা মামলা করা হয়েছে। তিনি ভাই হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও ফাঁসি চান।এব্যাপারে মামলায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। তার উপস্থিতিতে মারপিটের ঘটনা সত্য নয়। কেশবপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ মোঃ আবু সাঈদ জানান, মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে।