‘দূর থেকে কান্নার শব্দ ভেসে আসছিল। কাছে গেলেই চোখে পড়ে, বালু আর রক্তমাখা শরীর নিয়ে কাতরাচ্ছেন মানসিক ভারসমস্যহীন এক নারী। তবে কারণটা শুরুতে কেউই বুঝতে পারেনি। পরে কয়েকজন মহিলা ছুঁটে আসলে সঠিক কারণ নির্ণয় করা যায়। মূলত সন্তান প্রসব হয়েছে, ভূমিষ্ট নবজাতকের শরীরে নাড় পেঁচানো। মায়ের সঙ্গে সন্তানেরও পুরো শরীর বালু ও রক্তেমাখা। পরে দুই-তিনজন মহিলার সহযোগিতায় নবজাতকের নাড় কেটে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় অপরিপক্কভাবে জন্ম নেওয়ায় শিশুটির মৃত্যু হয়।’
শুক্রবার পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার পূর্ব বাহেরচর গ্রামে অজ্ঞাত পরিচয়ের মানসিক ভারসম্যহীন নারীর সন্তান প্রসবের ঘটনার বর্ণনা এভাবেই স্থানীয়রা দিয়েছেন। স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ৪-৫ মাস ধরে পূর্ব বাহেরচরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল ভারসম্যহীন ওই নারী। শুক্রবার ভোরে কিংবা রাতে সন্তান প্রসব হয় বলে ধারণা করছেন তারা। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় ও আলোচনা চলছে। ভারসমস্যহীন নারীর ওপর নির্যাতন কারীদের বিচার দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
পূর্ব বাহেরচর গ্রামের আনোয়ারা বিবি বলেন, ‘আমার ঘরের পাশে রাস্তায় একটা মহিলার কান্নাকাটি শুনতে পাই। কাছে গিয়া দেখি মহিলা গোংরাচ্ছে (কাতরাচ্ছে)। সারা শরীর রক্তেমাখা। পরে আরও কয়েকজন মহিলার সহযোগিতায় দেখতে পাই, তার মেয়ে সন্তান প্রসব হয়েছে। কিন্তু নড়াচড়া করছে না বাচ্চাটি। পরে নাড় কেটে দেখি, বাচ্চাটি মারা গেছে।’ ওই গ্রামের আইয়ুব মিস্ত্রী বলেন, ‘ শিশুটিকে মৃত জন্ম নেওয়ায় স্থানীয়রা মিলে দাফন দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ওসি আলী আহম্মেদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। ভারসম্যহীন ওই নারীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিব।