অবশেষে বহুল প্রতিক্ষিত বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ প্রায় ৫বছর পর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ২য় অধিবেশনে মজিবর রহমান মজনুকে সভাপতি এবং রাগেবুল আহসান রিপুকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বলে কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আসেননি তিনি।
শনিবার বেলা ১১টায় বগুড়া শহরের ঐহিহাসিক আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম তাদের নাম ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি আরও তিনটি পদে পাঁচজনের নাম ঘোষণা করেন।
তারা হলেন- সহ-সভাপতি টি জামান নিকেতা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যথাক্রমে মঞ্জুরুল আলম মোহন, সাগর কুমার রায় ও আসাদুর রহমান দুলু এবং অর্থ সম্পাদক মাসুদুর রহমান মিলন।
দ্বিতীয় অধিবেশনের সভাপতি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক জানান, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যারা প্রার্থী হয়েছিলেন, তাদের সঙ্গে শুক্রবার রাতে কথা বলে দলের সার্বিক পরিস্থিতি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানানো হয়। পরে তিনি যোগ্যদের মধ্য থেকে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেন। কমিটি ঘোষণার পর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের আহ্বান জানান। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টায় জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।
এতে প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ-পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নান, বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবর রহমান, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু ও মেরিনা জাহান।সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের বিলুপ্ত কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি। সম্মেলনে ৫১৫ জন কাউন্সিলর ছাড়াও প্রায় ২০ হাজার ডেলিগেট উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতি মজিবর রহমান মজনু সদ্যবিলুপ্ত জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া সহ-সভাপতি টি জামান নিকেতাও বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। যে তিনজনকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়েছে তাদের মধ্যে মঞ্জুরুল আলম মোহন ওই একই পদে ছিলেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনীত অপর দু’জনের একজন সাগর কুমার রায় বিলুপ্ত কমিটির যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং আসাদুর রহমান দুলু সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তবে কোষাধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মিলন বিলুপ্ত কমিটির কোনো সদস্য ছিলেন না। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের ছেলে এবং বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি।
এদিকে নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দের নাম ঘোষণার পরপরই মাঠে উপস্থিত নেতাকর্মী এবং কাউন্সিলরদের একটি অংশ মানি না, মানি না বলে শ্লোগান দেওয়া শুরু করেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ মঞ্চ ত্যাগ করলে নেতাকর্মীরা বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মলন উপলক্ষে গোটা শহর জন সমুদ্রে পরিনত হয়। সম্মেলন শুরুর নিদিষ্ঠ সময়ের অনেত আগেই শহরের আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠ কানায় কানায় পরিপূর্ন হয়ে যায়।