ইউপি চেয়ারম্যানের হেফাজতে থাকা বাড়ি চুরির ঘটনায় আটক চোর পালিয়ে গেছে। পুলিশের কাছে ওই চোরকে হস্তান্তর না করে, চেয়ারম্যান নিজ দায়িত্বে রাখার নামে চোরের পরিবারের লোকজনের হাতে তুলে দিয়েছেন। এমন অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শ্রী প্রণোবেশ চন্দ্র বাগচীর বিরুদ্ধে।
রোববার প্রকাশ্য দিবালোকে বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের উকিলপাড়ার কৃষক মহসিন প্রামানিকের (৭০) বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। বাড়ির মালিক মাঠে গরু চরানো শেষে বাড়িতে এসে দেখতে পায় ঘরের মধ্যে চার। এ সময় ঘরে ঢুকে চোরকে ধরার চেষ্টা করলে চোর বৃদ্ধ গৃহকর্তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। বাড়ির মালিকের চিৎকারে গ্রামের লোকজন প্রায় আধা কিলোমিটার ধাওয়া দিয়ে চুরির ৪১ হাজার টাকাসহ চোরকে আটক করে।
পরে গ্রামবাসী উদ্ধারকৃত টাকা বৃদ্ধ মহসিন প্রামানিকের হাতে তুলে দেয় এবং চোরকে গ্রাম পুলিশ রবিউল ইসলামের কাছে সোপর্দ করে। গ্রাম পুলিশ বিষয়টি চেয়ারম্যান প্রনোবেশ চন্দ্র বাগচিকে অবহিত করে চোরকে ইউনিয়ন পরিষদের হল রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে।
এ সময় পুলিশের হটলাইনে (৯৯৯) খবর পেয়ে সৈয়দপুর থানা পুলিশের একটি দল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে হাজির হলে চেয়ারম্যান ওই চোরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেননি। চোরকে না পেয়ে পুলিশের দলটি থানায় ফিরে আসে। এদিকে সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান চোরের মা ও বোনকে সাথে নিয়ে হল রুমের তালা খুলে দেখতে পায় চোর কক্ষে নাই। এ সময় প্রচার করা হয় যে, ভেনটিলেটর ভেঙ্গে চোর পালিয়ে গেছে।
উকিল পাড়ার মহসিন প্রামানিক জানান, সৈয়দপুর শহরের ভার্ক এনজিও থেকে লোন করা টাকা চুরি হয়েছে। ওই টাকা দিয়ে নতুন ঘর নির্মানের কথা ছিল। তিনি চুরি যাওয়া টাকা গ্রামবাসী আবদুল ওহাব ও মোতালেবের হাত থেকে বুঝে পেয়েছে।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান প্রনোবেশ চন্দ্র বাগচি জানান, পুলিশ উদ্ধারকৃত টাকাসহ চোরকে হস্তান্তর করতে বলেন। কিন্তু আমি টাকা পাবো কোথায়? ৬ ঘন্টা চোরকে আটকে রেখে চোরের পরিবারের সদস্যেদের সাথে আঁতাত করার বিষয়ে তিনি বলেন, চোরকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছি এটা মিথ্যা কথা।
সৈয়দপুর থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ শাহজাহান পাশা এ প্রসঙ্গে বলেন, পুলিশ চোরকে গ্রেফতার করতে গেলে ইউপি চেয়ারম্যান অসহযোগিতা করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষ থেকে চোর পালিয়ে গেছে কিনা তা আমার জানা নেই এবং এ বিষয়ে থানায় কোন মামলাও হয়নি।
পালিয়ে যাওয়া ওই চোরের বাড়ি নীলফামারী গাছবাড়িতে। সে সৈয়দপুর শহরের ইসলামবাগ এলাকায় থাকতো বলে জানা গেছে। ভেনটিলেটর দিয়ে চোর পালানো সম্ভব নয় বলে অনেকে মনে করছেন। এ ছাড়া ভেনটিলেটরের দুপাশেই কোন প্রকার পায়ের বা শরীর কোন দাগ দেখা যায়নি বলে অনেকেই জানিয়েছেন।