জেলার মুলাদী উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের পশ্চিম কমিশনারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী এক শিক্ষিকাকে প্রকাশে মারধর করেছে অপর জুনিয়র এক শিক্ষিকা। এ ঘটনার একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে।
জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে জুনিয়র এক শিক্ষিকা শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সামনে মারধরের বিষয়টি নৈতিকতার অবক্ষয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় তারা মারধরকারী জুনিয়র শিক্ষিকার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি করেছেন। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, বিষয়টি জানার পর সাথে সাথে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে ঘটনার তদন্ত করে জেলা শিক্ষা কার্যালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। তদন্তে সত্যতা পাওয়ায় মারধর করা ওই শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল লতিফ মজুমদার জানান, অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্রমতে, পশ্চিম কমিশনারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত ৭ ডিসেম্বর বিকেল তিনটার দিকে পরীক্ষা চলাকালীন সময় সহকারী জ্যেষ্ঠ এক শিক্ষিকার সাথে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বাগ্বিতন্ডা হয় অপর এক সহকারী জুনিয়র শিক্ষিকার। একপর্যায়ে শ্রেণি কক্ষের দরজা বন্ধ করে হঠাৎ করেই জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে মারধর করে সহকারী জুনিয়র ওই শিক্ষিকা।
এসময় জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকার চিৎকার শুনে বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষিকসহ আশপাশের লোকজন জড়ো হয়। এ সময় পুনরায় সবার সামনে বসেই জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে মারধর করেন জুনিয়র ওই শিক্ষিকা। মারধরের ঘটনাটি স্থানীয় কোনো এক ব্যক্তি তার মোবাইল ফোনে ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, জুনিয়র ওই শিক্ষিকা জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে উপুর করে দুই পায়ের মধ্যে আটকে ধরেছেন এবং এক হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে অন্য হাত দিয়ে একের পর এক থাপ্পর দিয়ে যাচ্ছেন। এসময় অন্য এক নারী এসে তাদের ছাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন এবং বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা এ দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখছে।
বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মারধরের ঘটনার পর স্থানীয়রা আহত জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে তিনিও হাসপাতালে যান এবং বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করার পর সহকারী শিক্ষা অফিসারকে পাঠিয়ে বিষয়টি তদন্ত করেছেন। এ বিষয়ে আহত শিক্ষিকা থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন।
প্রধানশিক্ষক আরও বলেন, বিষয়টি হলো সহকারী জুনিয়র ওই শিক্ষিকা চলতি বছরের মার্চ মাসে এ বিদ্যালয়ে আসেন। তার বাড়ি মুলাদী উপজেলায় হলেও তিনি থাকেন বরিশালে। প্রতিদিন তিনি বিদ্যালয়ে অনেক বিলম্ব করে আসেন। তার ইচ্ছেমতো চলার কারণে শিক্ষা অফিসকে এর আগেও জানানো হয়েছিল। এসব বিষয়ে তাকে কিছু বললে তিনি রেগে যান এবং কারও সাথেই সন্তোষজনক আচরণ করেন না। এমনকি এর আগে আমার বিরুদ্ধেও তিনি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছেন। যার তদন্তও শিক্ষা অফিস করেছে। অভিযুক্ত সহকারী জুনিয়র ওই শিক্ষিকা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ও জ্যেষ্ঠ শিক্ষিকার বিভিন্ন অপরাধের বিষয়ে তিনি শিক্ষা অফিসে অভিযোগ করেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।