বগুড়ার শেরপুরের শেরুয়া বটতলা থেকে ভবানীপুরের আঞ্চলিক সড়কের আড়াই কিলোমিটার এলাকায় বাড়িঘর তৈরী করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে ৭৬টি অসহায় ভূমিহীন পরিবার।
শেরপুর উপজেলার মির্জাপুর ও শাহবন্দেগী ইউনিয়নের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর আওতাভুক্ত সড়কের মির্জাপুরের আড়ংশাইল মোড় থেকে শেরুয়া বটতলার দক্ষিণে আন্দিকুমড়া পর্যন্ত ২.৪ কিলোমিটার সড়কের উপরে গত দশ বছরে গড়ে উঠেছে ৭৬টি বসতবাড়ি। সেখানেই টিন দিয়ে একটি ঘর তৈরী করে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন নদীভাঙ্গন কবলিত অসহায় ৭৬টি পরিবার। ওই একটি ঘরের মাঝে বেড়া দিয়ে থাকে মানুষ, গরু ছাগল। সেখানেই চলে তাদের আটপৌরে জীবন। পাকাসড়কের উপর এভাবে বসবাস যেমন তাদের জন্য ঝুঁিকপুর্ণ তেমনি সড়ক দখল হয়ে পড়ায় সড়ক দুর্ঘটনার আশংকা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সেখানে বসবাসরত লাল মিয়া জানান, ‘আগে বাড়ি আছিল সারিয়াকান্দির বোহাইলে। যমুনার ভাঙ্গনের পর ১০ বছর হলো এটি আছি। চাতালে কাজ করে ৪ জনের সংসার চালাই। যাবার কোন জায়গা না থাকায় রাস্তার উপরই ঘর কইরা আছি।’
চায়না বেগম জানান, সারিয়াকান্দি থেকে এখানে এসে একটি ঘর করেছেন ৭ বছর হলো। রাস্তা পাকা হওয়ায় ঝুঁিক থাকলেও বাধ্য হয়ে এখানেই বাস করতে হচ্ছে।
একই কথা বললেন সুখী খাতুন ও বুলি বেগম । তাদের দাবী আমাদের ভিটে মাটি না থাকায় সরকারি রাস্তায় ঘর করে থাকি। এলাকায় ভোটার হলেও এখনও সরকারি কোন সুযোগ সুবিধা তারা পাননা বলে জানান।
এ ব্যাপারে মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোহাম্মাদ আলী মুন্টু জানান, শেরপুর-ভবানীপুর সড়কের উপর ঘর বাড়ি তৈরী করে শতাধিক পরিবার বসবাস করে বিষয়টি আমার জানা আছে। এদের অধিকাংশই নদী ভাঙ্গন কবলিত ভুমিহীন মানুষ। তাদের পুর্নবাসন করা গেলে প্রশস্ত সড়কটি দখলমুক্ত করা সম্ভব।
মির্জাপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের ভূমি সহকারি কর্মকর্তা জাকারিয়া সরকার আপেল জানান, সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর নিয়ন্ত্রণাধীন। তারাই এর ভুমি উন্নয়ন কর দেয় এবং রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে রয়েছে। সড়ক দখল করে বাড়িঘর নির্মাণের বিষয়টি তাদেরই দেখা উচিত।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর শেরপুর উপজেলার উপ সহকারি প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ জানান, শেরপুর-ভবানীপুর আঞ্চলিক সড়কটি প্রায় ১শ ফুট প্রশস্ত এবং এর ১০ ফুট পাকাকরণ করা হয়েছে। এটি দখল করে বাড়িঘর নির্মিত হলেও আমাদের করণীয় কিছু নেই। আমরা সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবগত করেছি।
এ ব্যাপারে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. লিয়াকত আলী সেখ জানান, অবৈধ দখলদারদের তালিকা করে সরকারি রাস্তা থেকে তাদের উচ্ছেদের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।