স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতির ভাইয়ের স্ত্রী তাই দীর্ঘ ছয় বছর ধরে স্কুলে অনুপস্থিত থেকেই বেতন ভাতা তুলে নিচ্ছেন সহকারী শিক্ষিকা ঝুমুর আক্তার। স্কুলের শিক্ষার্থীরা ঝুমুর নামে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ম্যাডাম নেই বলে জানিয়েছে। ঘটনাটি জেলার নদীবেষ্টিত মুলাদী উপজেলার জাগরণী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের।
সরেজমিনে স্কুলের কর্মরত শিক্ষক ও শিক্ষিকারা এ বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে মজিবুর রহমান নামের সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক বলেন, সহকারী শিক্ষিকা ঝুমুর আক্তার স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম পলাশ সাহেবের ভাইয়ের স্ত্রী। কোন কথা বলতে হলে বরিশাল শহরে গিয়ে সভাপতির সাথে কথা বলতে হবে।
প্রধানশিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা সকল শিক্ষক স্কুল পরিচালনা কমিটির নির্দেশনা অনুযায়ী চলি। তিনি আরও বলেন, কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম পলাশের ভাইয়ের স্ত্রী ঝুমুর আক্তার বর্ষা মৌসুমে স্কুলে অনুপস্থিত থাকলেও শীতের মৌসুমে নিয়মিত ক্লাস করান। স্কুলের অসংখ্য শিক্ষার্থীরা জানায়, ঝুমুর আক্তার নামে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো ম্যাডাম আছে তা তাদের জানা নেই।
এ ব্যাপারে স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ তারিকুল ইসলাম পলাশ সাংবাদিকদের বলেন, আমার শ্যালক কাস্টম অফিসার ও যুগ্ম সচিব। আমি আইনজীবী সমিতির সদস্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি বলে তাহলে আমার ভাইয়ের স্ত্রীকে বরখাস্ত করা হবে। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের স্কুলে কাজ কি? তাদের অন্যকোন কাজ নেই। অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষিকা ঝুমুর আক্তারের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বক্তব্য নেয়ার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোনের লাইন বিচ্ছিন করে তা বন্ধ করে রাখেন।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি জেনে তিনি মুলাদী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে জরুরি ভিত্তিতে সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের সুপারিশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।