নেত্রকোনার দুর্গাপুরে পৌরসদরের সবক’টি রাস্তা দিয়ে ভেজা বালুবাহী লড়ি ট্রাক্টর,ট্রাক পরিবহন ও গাড়িতে অতিরিক্ত পরিমান বালু ভর্তি করে নিয়ে যাওয়ায় বিপাকে জনচলাচল,চরম দুর্ভোগ জনমনে। রাস্তা চলাচলের অনুপযোগি হওয়ায় অনেক স্কুল শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ সাধুপাড়াস্থ স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অসংখ্য অভিভাবকদের। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইউএনও ফারজানা খানমের নিকট তাঁর কার্যালয়ে এমন অভিযোগ করছেন বিক্ষোদ্ধ স্থানীয়রা।
ভুক্তভোগীরা জানান,আমরা সাধুপাড়াস্থ এলাকার প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। আমাদের সন্তানরাও কি স্কুলে যেতে পারবেনা ? কি দোষ করেছে আমাদের সন্তানরা। সুসং বিদ্যানিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর লড়ি ট্রাক্টর দিয়ে অনেক অংশ ভেঙ্গে দিয়েছে। রাস্তা এখন বুরো ধান রোপনের উপযোগি। রাস্তায় কেউ বের হলেও বাসায় ফিরতে হচ্ছে কাঁদা মাখা জামা-কাপড় নিয়ে। ভয়ে শিক্ষার্থী ঘর থেকে বের করা যাচ্ছেনা বলে অভিযোগ অসংখ্য অভিভাবকের। পৌরসদরের প্রাথমিক,মাধ্যমিক,কলেজ,মাদ্রাসা’র মতো অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্টান রয়েছে। অবৈধ লড়ি ট্রাক্টর,থ্রি-হুইলার চালিত অটো রিক্সার দাপটে কমতে শুরু করেছে ঐসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। খুঁদে শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া অনেকাংশে বন্ধ বলে সাথী নামে এক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,আমার বাচ্চাটা এখন স্কুলে যায়না। তার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন,পৌরসদরের রাস্তা এখন মরণ ফাঁদ! স্কুলে দিয়ে আমার শিশুর লাশ কোলে নিবো। অদক্ষ চালক আর অতি মাত্রার গতি নিয়ে যেভাবে লড়ি ট্রাক্টর রাস্তায় চলাচল করছে তাতে শিশুরা এখন স্কুল বিমুখ। তাঁদের আস্থা ফেরাতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করছেন তিনি। সাধাপাড়াস্থ সাবেক কাউন্সিরর শহীদুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যারা নীতি নির্ধারক তাঁদের সোচ্চার ভূমিকা রাখতে হবে। লড়ি সংগঠন করে অনেকে অর্থের মহোৎসবে নেমে পড়েছেন। নিয়ন্ত্রকদের নাম ভাঙ্গিয়ে নানানভাবে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ একটি মহলে বিরুদ্ধে। বিজ্ঞ আইনজীবী সেলিম মীরধা ক্ষোভ প্রকাশ বলেন,আমরা কি দুর্গাপুর থেকে চলে যাবো। কেন চলে যাবেন সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,দুর্গাপুর একটি অচল শহরে পরিণত হয়েছে। এখানে কি একজন সুস্থ মানুষ চলতে পারে? মানুষ হিসেবে তার যে নৈতিক অধিকার রয়েছে সবদিক থেকেই তা ক্ষুন্ন হচ্ছে। অতিরিক্ত শব্দ দূষণ,মাত্রারিক্ত বালু বুঝাই,গাড়ির বেপোরোয়া গতি,অদক্ষ চালকদের দৌরাত্ব, ভিজে বালু পবিহনে সবকটি রাস্তার এখন বেহাল দশা। উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ প্রতিনিধিকে জানান,অবৈধ লড়ি ট্রাক্টর বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনকে বলা হচ্ছে। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ব্যবস্থা নিতে ঢিলেমেসি করছেন কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সাংসদ সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বালুবাহী লড়ি ট্রাক্টর চলবে বলে জেলা প্রশাসক বরাবরে ডিও দিয়েছেন। এর পরেও কেন অধরাই থেকে যাচ্ছে এ মহলটি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার বলেন,লড়ি ট্রাক্টরের অবাধে চলাচল বন্ধে আমরা কার্যত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যে মিটিং করেছি। অচিরেই একটি ঘোষণা আসবে। একটি বিশেষ মহলের ইন্ধনে নিয়ম বর্হিভূত কার্যক্রমের ফলে রাস্তার অবস্থা অত্যন্ত নাজুক আকার ধারণ করেছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়ালও ভেঙ্গে ফেলছে এসব লড়ি ট্রাক। সার্বিক দিক বিবেচনায় অচিরেই আমরা একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে পারবো বলে আশা করি।