সপ্তম শ্রেণির ছাত্র দিগন্ত গোস্বামী। মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম ইতিহাসের কথা ওর তেমন জানা নেই। মা-বাবা আর স্কুলের শিক্ষকের কাছ থেকে শুনেছে পাকিস্তানি হায়েনাদের বর্বরতার কথা। দেখেছে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত বধ্যভূমি। গল্পের মত করে শোনা বাঙালি জাতির মর্মস্পর্শী বেদনার স্মৃতিগুলোই ওর কাছে মুক্তিযুদ্ধ। আর তাই চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় দিগন্ত সহজেই রং তুলির আঁচড়ে আংকন করেছে মুক্তিযুদ্ধ ও বধ্যভূমি।
গতকাল শনিবার দুপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে রংপুর টাউন হল চত্বরে জেলা প্রশাসন আয়োজিত শিশু-কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় দিগন্ত গোস্বামী। তের বছর বয়সী এই শিশু ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যামার স্কুলের ইংরেজি ভার্সনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিযোগিতায় গ বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। দিগন্তের মত প্রায় দুই শতাধিক শিশু-কিশোর এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
হৃদয় নিংরানো ভালোবাসা আর রং তুলির পরশে একেক জন প্রতিযোগি ফুটিয়ে তোলে না দেখা মুক্তি সংগ্রামের চিত্র। ওদের আঁকাআঁকিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বাঙালি জাতির উপর পাকিস্তানি বাহিনীর পাশবিক বর্বরতা ও গণহত্যার চিত্র উঠে আসে।
প্রতিযোগিতায় রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্লে গ্রুপ থেকে দশম শ্রেণি পড়–য়া শিশু শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। চিত্রাংকন শেষে রংপুর টাউন হল মিলনায়তনে বুদ্ধিজীবী দিবসের বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে বিজয়ী প্রতিযোগিদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কে.এম তারিকুল ইসলাম। জেলা প্রশাসক আসিব আহসানের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেন, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আবদুল আলীম মাহমুদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ছাফিয়া খানম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টুটুল, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান সিদ্দিকী রনি প্রমুখ।
আলোচনা সভায় বুদ্ধিজীবী দিবসের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বেগম রোকেয়া কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ শাহ আলম। পুরস্কার বিতরণ শেষে মুক্তিযুদ্ধে নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মোনাজাত করা হয়। বিকেল ছয়টায় টাউন হল চত্বরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দিবসটি উপলক্ষে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন কর্মসূচী পালন করবে জেলা প্রশাসন।