আদালত চত্ত্বরে প্রকাশ্যে ছেলের সামনে সতিনকে মারপিটের ঘটনায় লালমনিরহাটের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাসুমা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে লালমনিরহাট সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেন অভিযুক্তের সতিন (দ্বিতীয় স্ত্রী) সুরাইয়া জেসমিন।
অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট মাসুমা ইয়াসমিন লালমনিরহাট পৌরসভার নামাটারী এলাকার অ্যাডভোকেট মশিউর রহমানের স্ত্রী। তিনি লালমনিরহাট সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক।
মামলার বিবরনে জানা গেছে, গত ১০ বছর পুর্বে রংপুর শহরের ধাপচিকলী এলাকার মৃত আবুল কালাম আজাদের স্বামী পরিত্যাক্তা মেয়ে সুরাইয়া জেসমিনকে(৩০) দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করেন অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান। এরই মাঝে তাদের সংসারে ঈশান(৮) নামে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। বিয়ের পর থেকে সুরাইয়াকে সংসারচ্যুত করতে কারনে অকারনে শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করছেন তার সতিন মাসুমা ইয়াসমিন ও তার স্বামী মশিউর রহমান। যার বিচার চেয়ে সাম্প্রতি লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন সতিন মাসুমা ইয়াসমিন।
এরই প্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) ছেলেকে নিয়ে স্বামী অ্যাডভোকেট মশিউর রহমানের সাথে দেখা করতে লালমনিরহাট জজ আদালত চত্ত্বরের বার কাউন্সিল ভবনে যান দ্বিতীয় স্ত্রী সুরাইয়া জেসমিন। এসময় আদালত চত্ত্বরে তাদেরকে দেখে অ্যাডভোকেট মাসুমা ইয়াসমিন ও তার ভাই ইকবাল হোসেন মামুন(৪৮) মিলে এলোপাতারী মারপিট করে। এতে ছেলে ঈশানসহ সুরাইয়া জেসমিন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাদের মা ছেলেকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় বিচার চেয়ে সতিন মাসুমা ইয়াসমিন তার ভাই মামুন ও স্বামী অ্যাডভোকেট মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে শনিবার(১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সুরাইয়া জেসমিন।
বাদি সুরাইয়া জেসমিন বলেন, মশিউর রহমান আগের স্বামীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করায়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর প্রথম স্ত্রীর চাপে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও পুনরায় ২০১৬ সালের জানুয়ারীতে মশিউর রহমান আমাকে পুনরায় বিয়ে করেন। আমার কাছ থেকে ধার নেয়া ১২ লাখ টাকা ফেরত নিতে তার কার্যালয়ে গেলে মাসুমা ইয়াসমিন তার ভাইসহ বেধম মারপিট করে। তাদের হামলা থেকে ৮ বছরের ছেলে ঈশানও রক্ষা পায়নি। তারা ক্ষমতাসিন দলের আইনজীবী হওয়ায় কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস করে না। বিচার না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া কোন পথ নেই।
এ ব্যাপারে বাদির স্বামী অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান বলেন, দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে বিয়ে করলেও সুরাইয়া জেসমিনের সাথে সম্পর্ক নেই। কিন্তু সন্তানের ভরন পোষনের জন্য প্রতি মাসে খরচের চারগুণ টাকা বিকাশে পাঠানো হয়। এরপরও কর্মস্থলে এসে ব্লাকমেইল করা উচিৎ নয়। তবে ঘটনার সময় তিনি এজলাশে ছিলেন বলেও দাবি করেন তিনি।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মাহফুজ আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।