নওগাঁর রাণীনগরের আতাইকুলা পালপাড়া গ্রামের ১০ বীরাঙ্গনাকে সংবোর্ধনা দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন,স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ। এসময় সংবোর্ধনায় স্থানীয় এমপি ইসরাফিল আলম এর পক্ষ থেকে প্রত্যেককে একটি করে ছাগল উপহার দেয়া হয়েছে। স্বাধীনতার দীর্ঘ চার যুগ পর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পান ১০ বীরাঙ্গনা । সোমবার রাণীনগর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য,১৯৭১ সালের ২৫ এপ্রিল পাক হানদার বাহিনীর স্থানীয় দোসর রাজাকার আলবদরদের প্্রত্যক্ষ সহযোগীতায় প্্রকাশ্য দিবালোকে ওই দিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বিভৎষ্য অপকর্ম চালায় আতাইকুলা পাল পাড়া গ্রামে। এসময় গনহত্যা, নারী নির্যাতন, অগ্নীসংযোগ, লুটপাটসহ জঘন্যতম ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে সংখ্যালঘু পরিবারের কিশোর, যুবক, মাঝ বয়সী, ও বিভিন্ন বয়সী নারীদেরকে ধরে আতাইকুলা গ্্রামের যোগেন্দ্রনাথ পালের বাড়ির বারান্দায় জরো করে ব্্রাশ ফায়ার করে গোবীন্দ চরণ পাল, সুরেশ্বর পাল, বিক্ষয় সূত্রধর, নিবারন পালসহ ৫২ জন মুক্তি কামীকে নির্বিচারে হত্যা করে। এ সময় পাক হানদার বাহীনি গণহত্যা, লুটপাট ও নারী নির্যাতনের মতো ধ্বংস লীলা থেকে বিশেষ করে নারীরা স্বামী সন্তানদেরকে প্রাণে বাঁচানোর শেষ আকুতি করেও পাক-জান্তাদের মন গলাতে পারেনি। উল্টো হায়েনারা সুযোগ বুঝে নারীদের উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় । দেশ ও মার্তৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এই ১০ নারী বীরোত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও নানান কারণে রাষ্টীয় সম্মান মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি তাদের ভাগ্যে জোটেনি। অবশেষে গত ২৯ জুলাই ২০১৯ইং তারিখে আতাইকুলা পালপাড়া গ্রামের বাণী রানী পাল, ক্ষান্ত রাণী, রেনু বালা, সুসমা বালা,মায়া সূত্রধর, রাশমুনিপাল, কালিদাসি পাল, সন্ধ্যা রাণী পাল, গীতা রাণী পাল, ও সুষমা পাল এই ১০ বীরাঙ্গনা মহিলা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন।এর মধ্যে বাণী রানী পাল, ক্ষান্ত রাণী, রেনু বালা, সুসমা বালা মারা গেছেন । গত সোমবার বিজয় দিবসে রাণীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আল মামুনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাদের ভাতা, ক্রেস্ট ও স্মাট কার্ড দিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।
এছাড়া স্থানীয় এমপি ইসরাফিল আলম এর পক্ষে বীরাঙ্গনাদের একটি করে ছাগল দেন তার স্ত্রী মোছা: সুলতানা পারভীন বিউটি। অনুষ্ঠানে রাণীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল, উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ্যাড. ইসমাইল হোসেনসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।