মুড়ি উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত পিরোজপুরের মুড়ি প্রস্তুতকারীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে । জেলার নেছারাবাদউপজেলার ব্যাশকাঠীতে দিন রাত চলছে মুড়ি ভাজা। প্রতিদিন এ গ্রামগুলো থেকে ২/৩ শ মন মুড়ি স্থানীয় বাজার ও দেশের বিভিন্ন স্থানে চালান হয় । বছরে তৈরি হয় প্রায় ৩-৪ কোটি টাকার মুড়ি। শীত আর জাতীয় নির্বাচনের চাহিদা মেটাতে বাড়তি শ্রম দিতে হচ্ছে মুড়ি প্রস্তুতকারী পরিবার গুলোকে। তবে এ ব্যবসায় জড়িত মধ্যস্বত্বভোগীদের ভাগ্য ফিরলেও যারা মুড়ি তৈরী করেন তাদের নিজস্ব পুঁজি না থাকায় ভাগ্য বদলায় না। দরিদ্র এসব পরিবার জিম্মি হয়ে রয়েছে দাদননেয়া মধ্যস্বত্বভোগীদের কাছে। তাছাড়া সব পল্লী অঞ্চলে যাতায়াত ব্যবস্থা তেমন ভাল না হওয়ার কারনে সফলতা পাচ্ছে না এ ব্যবসার সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা।বিস্তারিত পিরোজপুর জেলা প্রতিনিধি গোলাম মোস্তফার পাঠানো ছবি ও তথ্য নিয়ে একটি রিপোর্ট।ভিও ঃ পিরোজপুরেরনেছারাবাদ উপজেলার ব্যাশকাঠী গ্রামের ২ শতাধিক পরিবার কয়েক যুগ ধরে মুড়ি ভেজে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। সুস্বাদু-মিষ্টি মুড়ি হিসেবে সারদেশে সমাদ্রিত এ এলাকার মুড়ি। এই গ্রামগুলো এখন তাদের আসল নাম হারিয়ে মুড়িপল্লী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। আমনের বিশেষ কয়েকটি জাতের ধান প্রকৃয়াজাত করে এ মুড়ির চাল তৈরি করা হয়। এখানকার মুড়িতে কোন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়না বলে এ মুড়ি স্বাস্থ্যসম্মত। মুড়ির কারিগরদের নিজস্ব পূঁজি না থাকায় আড়ৎদারদের কাছ থেকে দাদন নিতে বাধ্য হয়। তবে মুড়ি ভাজায় জ্বালানী কাঠ ও আনুষঙ্গিক কিছু খরচ বাদে প্রতি ৫০কেজি চালের মুড়ি তৈরি করে মজুরি পায় মাত্র ১৫০টাকা। এই অর্থেই চলে তাদের জীবন-জীবিকা, ছেলে মেয়েদের লেখাপড়াসহ যাবতীয় খরচ। রমজানের বড়তি চাহিদা এবং কিছু বেশি আয়ের জন্য রাত ৩টা থেকেই শুরু হয় মুড়িভাজা।এখানকার মুড়ি সুস্বাদু হওয়ায় সারা দেশেই এর সমাদর রয়েছে। ঢাকা, বরিশাল ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকাররা এখান থকে মুড়ি নেয় খুচরা ও পাইকারী ক্রেতারা ।
পিরোজপুরের নেছারাবাদের এ মুড়ি শীত মৌসুমে খুব চাহিদা কারণ এতে কোন রাসায়নিক সার নেই এবং খেতে খুব ভাল। যার জন্য বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে পাইকারীরা এখান এসে মুড়ি কিনে নিয়ে তা স্থানীয় বাজার,বরিশাল,খুলনা,ঢাকা সহ সারাদেশে পাঠায় বিক্রয় হয়। তবে যাতায়াত ব্যবস্থা খুব ভাল না হওয়ার কারনে আশানুরূপ মুড়ি ব্যবসায় সাফল্য পাচ্ছে না এখানকার মুড় ব্যবসায়ীরা ।বছরের পর বছর মুড়ি ভেজেও শুধুমাত্র পূঁজির অভাবে ভাগ্য ফেরাতে পারেনি এই পরিবার গুলো। মুড়ি ভাজাকে কুটির শিল্প হিসেবে বিবেচনা করে বিশেষ ঋনের ব্যবস্থা করা হলে এদের ভাগ্য ফিরবে এমনটাই প্রত্যাশা মুড়ি ব্যবসায়ীদের ।