রাজধানীতে ক্যাসিনো কান্ডের পর থেকে বগুড়ার দুর্নিতি দমন কমিশন ( দ’ুদক ) কার্যালয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি লক্ষ্যনীয় হয়ে উঠেছে। সমাজে যারা প্রভাবশালী , যাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে বলে গণ্য করা হত তাদের অনেকেই এখন দুদকের জালের আওতায় চলে আসছে এমন জোরালো তথ্য মিলেছে বগুড়া দুদকের কার্যক্রমে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে , বগুড়ার প্রভাবশালী শ্রমিক নেতা বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন ও সরকার সমর্থক শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়ের শেখ সামসুদ্দিন হেলাল বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাসে কত টাকা ভাতা গ্রহন করে থাকেন লিখিতভাবে তা’ জানতে চেয়েছে বগুড়া দুদক। বগুড়া দুদকের সহকারি পরিচালক আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এই চিঠি পাঠানো হয়েছে গত ১২ ডিসেম্বর।
চিঠির প্রেক্ষিতে বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের হিসাব বিভাগ থেকে শেখ হেলাল কর্তৃক ৩০ হাজার টাকা সম্মানি ভাতা নেওয়ার একটি জবাব দেওয়া হয়েছে মর্মে তথ্য পাওয়া গেলেও বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেণনি দুদকের সহকারি পরিচালক আমিনুল ইসলাম । তবে তিনি ১২ ডিসেম্বর শেখ হেলাল সম্পর্কে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নে চিঠি পাঠাবার কথা স্বীকার করেছেন তিনি। বগুড়া মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক ,শ্রমিক লীগের প্রভাবশালী নেতা এবং বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়ের শেখ হেলাল বগুড়ায় খুবই প্রভাবশালী হিসেবে চিহ্নিত ।
এদিকে বগুড়া জেলা আওয়ামীলীগের সদ্য বিদায়ী কমিটির ৩ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক ও সদ্য ঘোষিত দলের নতুন কমিটির ১ নম্বর যুগ্ম সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন ও তাঁর স্ত্রী কোহিনীর মোহন কিছুদিন আগে দুদক থেকে পাওয়া সম্পদ বিবরণী দাখিলের যে নোটিশ পেয়েছিলেন তার প্রেক্ষিতে তারা সম্পদ বিবরনী জমা দিয়েছেন। এখন তাদের দাখিল করা সম্পদ বিবরনী যাচাই বাছাই এর কাজ চলছে । যাচাই বাছাই এর কাজটি করছে দু’দকের সহকারি পরিচালক রবীন্দ্র নাথ চাকি । এবিষয়ে জানতে চাইলে রবীন্দ্র নাথ চাকি বলেছেন , ৭৫ কর্মদিবসের মধ্যে যাচাই বাছাই করে পাওয়া সার মর্ম হেড অফিসে পাঠানো হবে। সেখানেই স্থির হবে মোহন ও কোহিনুর মোহনের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে কিনা তা এখন দেখবার বিষয়?
বগুড়া দুদকের মামলায় সম্প্রতি যুবলীগ নেতা আব্দুল মতিন সরকার, পরিবহন গ্রুপের এক প্রভাবশালী ও আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল মান্নান আকন্দ , আরেক প্রভাবশালী যুবলীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম মোহনেরই ছোট ভাই মাকসুদুল আলম খোকন কারাবাস করে জামিনে বের হয়ে এসেছেন।
দ’ুদক বগুড়া অফিসের রেকর্ড অনুযায়ি দেড়শ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বগুড়ার সান্তাহার বাফার সার গুদামের সাবেক ইনচার্য নবির উদ্দিন ও বেসরকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক রাশেদুল ইসলাম রাজার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সম্প্রতি।
বেশ কয়েকটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করে ¯্রফে সার্টিফিকেট বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা উপার্জনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বহুল আলোচিত এ এফ এম নুরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আকলিমাকে ও তাদের সম্পদ বিবরনী দাখিল করতে চিঠি দিয়েছে দু’দক। বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির সাবেক মহা পরিচালক এম এ মতীন এবং তার পতœী শামীমা আফরোজকেও তাদের সম্পদ বিবরনী দাখিল করতে বলেছে । সাবেক পাটমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীও বগুড়া দুদকেরই একটি মামলায় কারাগারে গেছেন ।
দু’দক সম্প্রতি হাতে নাতে ঘুষের টাকা সহ বগুড়া সদরের আনসার কর্মকর্তা আনিসুর রহমান, গাবতলীর নাড়–য়ামালা ইউনিয়নের তহশীলদারকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে । কর্মকর্তারা জানিয়েছেন দু’দকের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং কার্যক্রম চালাতে কে প্রভাবশালী তা’ দেখা হবেনা ।