ঝালকাঠি শহর ও শহর সংলগ্ন পার্শবর্তি এলাকায় বিশেষ করে বিসিক শিল্পনগরীর জনবসতি এলাকার অবৈধ ইটভাটা গুলো পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় ডেকে আনছে। কিন্তু পরিবেশ অধিদপ্তরের এসব ভাঁটা বন্ধে জেল, জরিমানা ও কারাদ- দিলেও উচ্ছেদে স্থায়ী ভাবে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছেনা। কিছু কয়লা রাখা হলেও অধিকাংশ ভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে প্রকাশ্যেই। এতে একদিকে জনস্বাস্থ্য অন্যদিকে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। পাশাপাশি উপজেলা গুলোতে অবৈধ ইটের পাজায় কাঠ পুড়িয়ে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ হুমকির মুখে পরছে। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের দাবি দেশের সকল জেলা প্রশাসকদের ভাঁটা বন্ধে ক্ষমতা দেয়া আছে। জেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলে পরিবেশ অধিদপ্তর সহযোগীতা করতে পারে। ২০১৩ সন পর্যন্ত প্রতিটি ইটভাটার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়া ছিল। এরপর থেকে কোন ভাঁটা মালিক ছাড়পত্র নবায়ন করেনি বলে জানাযায়। পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রমতে ইটভাটা স্থাপনা আইন মেনে মালিকরা ভাঁটা স্থাপন করছেনা। পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিমত আইন মেনে ভাঁটা স্থাপন করলে সহজেই ছাড়পত্র পাওয়া যায়।
গতকাল ঝালকাঠি পুলিশ লাইন সংলগ্ন এআরএম ইট ভাটায় গিয়ে দেখা যায় হাজার হাজার মণ গাছ কেটে এনে স্তুপ দিয়ে রাখা হয়েছে খালের পাড় সংলগ্ন। সেখান থেকে ভ্যান রিকসায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ভাটায় ইট পোড়ানোর জন্য। এআরএম ব্রিকসে গিয়ে মালিক পক্ষের কাউকেই পাওয়া যায়নি। কথা হয় ম্যানেজার পরিচয় দেয়া সিদ্দিকুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, আমাদের জিগজাগের জন্য ড্রাম ভাংতে যে ক্ষতিপূরণ হবে তা কেে দেবে। সরকারতো দিবেনা। তাছাড়া আমরা এখনো সরকারেকে ভ্যাট, ট্যাক্স, ফায়ারসার্ভিসসহ ১৫ খাতে টাকা দিচ্ছি। আমাদের এগুলো অবৈধ হলে সরকার এ টাকা নিচ্ছে কেন। ঝালকাঠির ২/৪ টি ছাড়া সব ভাটাই এভাবে অবৈধভাবে পরিবেশের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে। ইট পাজায়তো কিছুই লাগেনা। তাহলে কেন আপনারা এভাবে আমাদের নিয়ে লেখালেখি করেন। সিদ্দিকুর রহমান আরো জানান, আমরা লাইসেন্স নবায়নের আবেদন করেছি জেলা প্রশাসনের কাছে। ঝালকাঠির প্রায় ৬০টি ইটভাটাই এভাবে চলছে বলেও তিনি জানান।
এ প্রসঙ্গে বরিশাল পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক আঃ হালিম জানান, আমি আন্তরিক ভাবে এসব অবৈধ ভাঁটা বন্ধে কাজ করে যাচ্ছি। কিছুদিন আগেও নলছিটির একটি অবৈধ ইট ভাটায় অভিযান চালিয়ে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করে জেল দিয়েছে। বুধবার নলছিটির আমিরাবাদে যাচ্ছি ইটভাটায় অভিযান পরিচালনার জন্য। জেল জরিমানা কারাদ- দিয়েও এসব অবৈধ ভাঁটা মালিকদের কার্যক্রম থামানো যাচ্ছেনা। আইনের প্রতি কিছু মানুষের শ্রদ্ধা নেই। কিছু ব্যবসায়ী অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের জন্য এসব করছে। জেলা প্রশাসকদের এসব ভাঁটা বন্ধের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তারা আমাদের সহযোগীতা চাইলেই জনস্বার্থে পরিবেশ বাঁচাতে আমার জেলা প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগীতা করতে পারি। ২০০৩ সালের পর ঝালকাঠির সকল ইটভাটা মালিকরা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই ভাঁটা চালাচ্ছেন বলেও এই পরিচালক জানান।