দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে অব্যাহত শৈত্য প্রবাহে কনকনে ঠান্ডা আর হিমেল হাওয়ায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া শ্রমজীবি মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। দিন দিন বাড়ছে শীতের তীব্রতা। শৈত্য প্রবাহ আর বৃষ্টির মতো ঝরছে কুয়াশা। গত ৮দিনেও সূর্যের দেখা মেলেনি। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে ঘোড়াঘাট উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। দিন রাত ২৪ ঘন্টা থাকছে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে কুয়াশায়। ঘন কুয়াশার কারণে রাতে চলাচলের বিঘœ ঘটছে। দিনের বেলায় দুরপাল্লার যানবাহন হেড লাইট জ্বালিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে। হঠাৎ পৌষের শুরুতেই এমন ঠান্ডায় বিপাকে পড়েছে সর্ব স্তরের মানুষ। এই ঠান্ডায় কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। প্রয়োজন পড়েছে শীত নিবারনের জন্য শীত বস্ত্রের। বিশেষ করে শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা পড়েছে বিপাকে। ফুটপাত সহ উপজেলার হাট বাজারে রয়েছে গরম কাপড়ের দোকান। ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকান গুলোতে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। গরম কাপড়ের ব্যবসায়ীরা এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কাপড়ের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে অস্বাভাবিক হারে। অর্থাভাবে ছিন্নমূল, দরিদ্রদের পক্ষে শীত বস্ত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রতি দিনই বাড়ছে শীতের তীব্রতা ধনী, মধ্য বিত্ত স্বালম্বিদের গরম কাপড় কেনার সামর্থ থাকলেও দরিদ্র মানুষেরা শীত বস্ত্র ক্রয় করার সামর্থ না থাকায় তারা শীতের গরম কাপড় ক্রয় করতে পারছেনা। ফলে তারা শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পাচ্ছেনা। ছিন্নমূল, দরিদ্র মানুষ খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারন করছে। তারা এ ভাবেই শীতের তীব্রতা থেকে বাঁচতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সকাল, সন্ধা ও রাতে সমান ভাবে পড়ছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। রাতের বেলায় তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় তীব্রতা আরোও বেড়ে যায়। গত ৮দিন থেকে সূর্যের মুখ দেখতে পায়নি এ অঞ্চলের মানুষেরা। বিশেষ করে উপজেলার বুলাকীপুর ইউনিয়ন ও সিংড়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর তীর বর্তী গ্রামের মানুষ গুলো পড়েছে বেশি বিপাকে। প্রায় ২মাস পূর্বে সরকারী ভাবে শীত বস্ত্র বরাদ্দ হয়ে আসলেও তা অজ্ঞাত কারনে বিতরণ করা হয়নি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্র জনায়, ঘোড়াঘাট পৌরসভা ও উপজেলার ৪টি ইউনিয়নে তৃতীয় দফায় ২ হাজার ৯৫০ পিচ শীত বস্ত্র কম্বল দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয় থেকে দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সূত্র জানায়, পৌরসভা ও ইউনিয়ন গুলো থেকে অগ্রাধিকার তালিকা প্রস্তুত করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়ে দেয়ার কথা। তবে তালিকা না দেওয়ায় ২২ ডিসেম্বর রবিবার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপির মাধ্যমে কম্বল বিতরণ করা হবে। তালিকা প্রস্তুত ও কম্বল বিতরণের ব্যাপারে ১নং বুলাকীপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান লাবলু, ২নং পালশা ইউপি চেয়ারম্যান কবিরুল ইসলাম ও ঘোড়াঘাট ইউপি চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইলামের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তারা জানান, সরকারি ভাবে শীত বস্ত্র বরাদ্দ এসেছে। কিন্তু তারা বিতরণ বিষয়ে কিছুই জানেন না। সিংড়া ইউপি চেয়ারম্যান আঃ মান্নান মন্ডলের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।