কমরেড আবদুস সালাম আর সাবেক সাংসদ এবাদৎ মন্ডল ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত মুখ। রাজনৈতিক দর্শনে তারা ছিলেন ভিন্ন ঘরানার। কিন্তু তারা ছিলেন একে অপরের পরম বন্ধু। এ দুই নেতার পরষ্পরের মধ্যে বোঝাপড়া ছিল বেশ। অথচ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের মাঠে একজন অন্যজনের বিরুদ্ধে ভোট যুদ্ধে নেমেছেন একাধিকবার। গত ২২ ডিসেম্বর রাতে মারা যান সাবেক সাংসদ এবাদৎ হোসেন মন্ডল। পরের দিন ২৩ সন্ধ্যায় মরহুমের গ্রামের বাড়ি জামাল ইউনিয়নের নাটোপাড়ায় নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। খবর পেয়েই ছুটে যান কমরেড আবদুস সালাম। সেখানে অনুষ্ঠিত নামাজে জানাযায় শরিক হয়েছিলেন বন্ধু কমরেড আবদুস সালাম। দীর্ঘদিনের সম্পর্কের এ মানুষটিকে চিরবিদায় দিয়ে বাড়িতে এসে ওই রাতেই ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হন কেন্দ্রিয় বাম নেতা আবদুস সালাম। এরপর প্রথমে তাকে কালীগঞ্জ পরে যশোর ও ঢাকার হৃদরোগ ইনষ্টিটিউটে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ২৬ ডিসেম্বর বেলা ২ টার দিকে মারা যান। ( ইন্নালিল্লাাহে....রাজেউন)। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বলরামপুর গ্রামের কৃতী সন্তান মরহুম কমরেড আবদুস সালাম জীবদ্দশায় ১৯৭০ সালে ছাত্রজীবনে আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকেই পূর্ব পাকিস্থান কমিউনিষ্ট পার্টির ছাত্র সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত হন। এরপর আত্মসমর্পন করে প্রকাশ্যে এসে ৭৭ সালে মাওলানা ভাষানীর নেতৃত্বে ইউনাইটেড পিপলস পাটিতে যোগ দেন। পরবর্তিতে কেন্দ্রিয় নেতা রাশেদ খান মেননের সাথে ওয়ার্কাস পাটির কেন্দ্রিয় কমিটির নেতা নির্বাচিত হন। তার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষের জন্য কাজ করে গেছেন। শুক্রবার পবিত্র জুম্মার নামাজের পর তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। সাবেক এমপি ইবাদত হোসেন মন্ডল মারা যাবার ৪ দিন পর কমরেড আবদুস সালাম মারা গেলেন।
কমরেড আবদুস সালাম ঝিনাইদহ -৪ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বামদলের হয়ে একাধিকবার নির্বাচন করেছেন। সে সময়ে এবাদৎ হোসেন মন্ডলও অন্যদল হতে তার প্রতিপক্ষ প্রার্থী ছিলেন। এই দু,নেতা কালীগঞ্জ বাসির কাছে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। অনেক সময় ওয়াকার্স পার্টির কোন কেন্দ্রীয় প্রোগাম হলে কমরেড আবদুস সালাম কর্মীদের নিয়ে ঢাকার প্রোগাম সফল করার জন্য বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লিফলেট দিয়ে টাকা তুলে প্রোগাম সফল করতেন। কৃষকদের আখের মুল্য বৃদ্ধির জন্য একাধিক সময়ে আন্দোলন ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
সাবেক সাংসদ এবাদৎ হোসেন মন্ডলের ভাইপো জামাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোদাচ্ছের হোসেন মন্ডল জানান, কমরেড আবদুস সালামের সাথে আমার চাচার গভীর সম্পর্ক ছিল। তারা দুজনে ছিলেন একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চাচার জানাযায় গিয়ে তিনি আমাদের পরিবারের সকলকে স্বান্তনাও দিয়ে এসেছিলেন। এরপর বাড়ি ফিরে তিনি ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে তিনিও মারা গেলেন।