“মুজির বর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার” বাক্যকে ধারণ করে দীর্ঘদিন থেকে নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য কাজ করে মানবতার সেবক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন জেলার বানারীপাড়া থানায় কর্মরত উপ-সহকারি পুলিশ পরিদর্শক এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।
ইতোমধ্যে তিনি নিজের বেতনের টাকায় অসহায় এক পঙ্গু বেকার যুবককে হাঁসের খামার করে দিয়ে পুরো জেলাজুড়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন। এবার তিনি হিন্দুসম্প্রদায়ের দারিদ্র অসহায় পরিবারের মৃত এক ব্যক্তির সৎকারের ব্যবস্থা করে দিয়ে পুর্ণরায় আলোচনায় এসেছেন। যেখানে এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে নিজ সম্প্রদায়ের লোকজনও এগিয়ে আসেননি সেখানে একজন পুলিশ অফিসারের ব্যক্তিক্রমধর্মী কর্মকা- নিয়ে শনিবার দিনভর বরিশাল শহরজুড়ে ছিলো এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা।
সূত্রমতে, বানারীপাড়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা জগদিশ চন্দ্র (৫৮) গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পরলোকগমন করেন। অসহায় দরিদ্র জগদিশের একমাত্র পুত্র জয় অর্থাভাবে তার বাবার সৎকারের ব্যবস্থা করতে পারছিলোনা। এজন্য তিনি (জয়) স্থানীয় নিজ সম্প্রদায়ের কয়েকজনের দারস্থ হলেও সবখান থেকেই সে নিরাশ হয়েছেন। যেকারণে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বাবার সৎকারের ব্যবস্থা করতে পারেনি জয়। শুধু বাবার মৃত দেহের পাশে বসে জয় অঝোড় ধারায় কান্নাকাটি করতে থাকে।
এ খবর জানতে পেয়ে শুক্রবার দুপুরে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ওই বাড়িতে হাজির হন মানবতার সেবক এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। তিনি জয়ের সাথে কথা বলে নিজ অর্থে সৎকারের সকল ব্যবস্থা করে নিজেই জগদিশের মৃতদেহ সার্বজনীন মন্দিরে নিয়ে যান। সেখানে সকল ধর্মীয় কাজ শেষে ওইদিন বিকেলে পৌরসভার কেন্দ্রীয় মহাশ্মশানে জগদিশ চন্দ্রের অন্তেষ্টিক্রিয়ার সকল ব্যবস্থা করেন। এ মহতি উদ্যোগের খবর ছড়িয়ে পরলে শনিবার দিনভর বরিশাল শহরজুড়ে ছিলো মানবতার সেবক এএসআই জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা।
শনিবার দুপুরে তিনি (জাহিদ) বলেন, স্বাধীনতার স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের অবহেলিত মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলো। তার অসমাপ্ত কাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকাংশে বাস্তবায়ন করেছেন। এখনও ২/১টি যে কাজ রয়েছে তা বাস্তবায়নে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই সোনার বাংলা বাস্তবে রূপ নিবে। তিনি আরও বলেন, সমাজের অবহেলিত মানুষের জন্য কিছু করতে পারলে নিজের কাছে খুব ভাললাগে। সেই ভাললাগা থেকেই “মুজির বর্ষের অঙ্গীকার পুলিশ হবে জনতার” নিজের বুকের মধ্যে এ বাক্যকে ধারণ করে যেদিন থেকে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেছি সেদিন থেকেই সমাজের অবহেলিতদের জন্য কিছু করার চেষ্ঠা করছি। জীবনে যতোদিন বেঁচে থাকবো ততোদিন আমি এ কাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে চাই।