জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলায় আগাম বোরো চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। গত কয়েকদিনের কনকনে শীত উপেক্ষা করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বোরো ধানের চারা বীজ লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। তবে খালে পানি সেচের প্রতিবন্ধকতায় বাম্পার ফলন ব্যহত হওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদার মাহফুজ খান সড়ক উন্নয়ন কাজের জন্য খালে দেয়া একাধিক বাঁধের কারণে অন্যান্য বছরের মতো এবছর পানি সঞ্চালন না হওয়ার আশংকা রয়েছে। খালের মধ্যের কাজ শেষ হলেও একবছর আগে দেয়া বাঁধ ও বাঁধের আনুসাঙ্গিক সরঞ্জামাদী অদ্যবর্ধি সরানো হয়নি। যে কারণে পানি সংকট দেখা দিয়েছে।
সূত্রে আরও জানা গেছে, উপজেলায় ২৬ হাজার ৪০৮জন চাষি পরিবার একমাত্র ধানের উপর নির্ভরশীল। ইতোমধ্যে পানি সংকটের কারণে জমি চাষাবাদ করতে না পারার আশংকায় গৈলা ইউনিয়নের উত্তর শিহিপাশা গ্রামের কালাম মৃধা, ওসমান হাওলাদার ও মধ্যশিহিপাশা গ্রামের ব্লক ম্যানেজার রব হাওলাদার কৃষি অফিস থেকে ভাড়া নেয়া সেচ পাম্প ফেরত দিয়েছেন।
ওইসব ব্লক ম্যানেজাররা জানান, সড়ক নির্মান কাজ সম্পন্ন হলেও দীর্ঘদিনেও খালের মধ্যে দেয়া বাঁধ ও বাঁধের পাইলিং ঠিকাদার অপসারণ করেননি। এছাড়াও সড়কের গাইড ওয়াল নির্মানের সময় কাটা মাটি খালের তলদেশ থেকে অপসারন করা না হলে চলতি মৌসুমের তারা খালে পানি পাবেন না। ফলে ধানের বাম্পার ফলন তো দুরের কথা, পানির অভাবে বোরো ব্লক শুরুই করতে পারবেন না। খালে পানি সংকটের কারণে উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে রাজিহার, বাকাল ও গৈলা ইউনিয়নের কয়েক হাজার চাষি পরিবার।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে মোট ৯ হাজার ৫শ’ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৪৮ হাজার ১৪৮ মেট্রিক টন চাল। এরমধ্যে চাষযোগ্য জমির মধ্যে সাত হাজার আটশ’ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড ধান ও এক হাজার সাতশ’ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল (উফসী) বোরো ধান আবাদ করা হবে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ইতোমধ্যে ৮০হেক্টর জমিতে হাইব্রীড ও ২০হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল বোরোসহ মোট একশ’ হেক্টর জমিতে আগাম চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। কনকনে শীত উপেক্ষা করে গত কয়েকদিন যাবত উপজেলার নীচু জমিগুলোতে শুরু হয়েছে আগাম ইরি-বোরো ধানের চারা বীজ রোপনের কাজ।
উপজেলা কৃষি অফিসার নাসির উদ্দিন বোরো মৌসুমে খালে পানি সংকটের শঙ্কার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারের উদাসিনতার বিষয়টি বিভাগীয় কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করা হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।