জয়পুরহাটের কালাই উপজেলাতে জেঁগে বসেছে শীত আর এই শীতে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, সেই সঙ্গে ঘন কুয়াশাও। রাত থেকে সকাল পর্যন্ত অবধি বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির। ঘন কুয়াশা সঙ্গে বইছে ঠান্ডা বাতাস আর ক্রমেই শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই কারনে কমছে তাপমাত্রা। শীতের তীব্রতা কারণে কাঁপছে উপজেলাবাসী। সেই সঙ্গে সূর্যের দেখা নেই কয়েক দিন ধরে। আর এর ফলে আলু এবং বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকেরা।
দেখা গেছে, কালাই উপজেলা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাওয়ায় গত কয়েক দিন যাবত সূর্যের আলো মাঝে মধ্যে সমান্য করে দেখা মেলে। ঘন কুয়াশার কারনে দিনের বেলায় বিভিন্ন যানবাহনগুলো হেডলাইট জ¦ালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে। জরুরি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে কেউ বাইরে বের হচ্ছে না,তবে বিপাকে পড়েছে বিভিন্ন স্কুলের কমলমতি শিক্ষার্থী ও নিস্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা। শীতের তীব্রতা কারণে বিভিন্ন হাট-বাজার ও শহরে আগের তুলনায় লোক সমাগম কমেছে। এই শীতে দেখা দিয়েছে মানুষসহ গবাদি পশু-পাখির শীত জনিত বিভিন্ন রোগ-বালাই। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার বীজতলা ও আলুসহ বিভিন্ন ফসল। এই শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে অনেক মানুষেরা খন্ড খন্ড করে খড়কুটাতে আগুন জ¦ালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের জন্য গরিব ও অভাবী মানুষেরা ভীর জমাচ্ছে পুরাতুন গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। বিশেষ করে-এই কনকনে শীতে ও ঝিরঝির ঠান্ডা বাতাসে কাহিল হয়ে খুব কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। আর সব মিলিয়ে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা।
কালাই-বগুড়া মহাসড়কের বাস চালক আব্দুল হামিদ ও উজ্জল হোসেন বলেন, গত কয়েক দিন যাবত ঘন কুয়াশার কারনে বাসের সামনে হেড লাইটগুলো জ¦ালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করতে হচ্ছে। আর সেই সঙ্গে আতঙ্কে মধ্যে দিয়ে বাস চলাচল করতে হচ্ছে।
কালাই বাসস্ট্যান্ডের চিনাবাদাম বিক্রেতা সাজাদুল বলেন,এই শীতে ঘুরেফিরে বাদাম বিক্রি করতে খুব কষ্টে হচ্ছে। শহরে আগের তুলনায় লোক সমাগম অনেক কমেছে আবার বাদাম বিক্রিও তেমন হচ্ছেনা।
কালাই পৌরসভার কাথাই মহল্লার আলুচাষী সাইফুল ইসলামসহ অনেকেই বলেন, গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি আর কুয়াশায় আলু গাছের পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। অনেক ঔষধ প্রয়োগ করছি কোন কাজের কাজ হচ্ছেনা। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকলে গাছের গোড়ায় পচন ধরবে। ফলে মাটির নিচে থাকা আলুতে দাগ দেখা দেবে।
উপজেলার উদয়পুর গ্রামের হাবিবুল বলেন, ঘন কুয়াশা ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ ফলে আমার প্রায় ১০ কেজির কাটারি জাতের ধান বীজ নষ্ট হয়েছে। আবার নতুন করে ধানের বীজ রোপোন করতে হবে।
কালাই উপজেলার নির্বাহী অফিসার মো. মোবারক হোসেন পারভেজ বলেন, কালাই পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাঝে ৩ হাজার ৪শ কম্বল দেওয়া হয়েছে। আরও কম্বল বরাদ্দ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।