মণিরামপুরে হাত-পা ছাড়াই জন্ম নেয়া প্রতিবন্ধী লিতুন জিরা প্রধান শিক্ষকের অসৌজন্য আচরণে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার খবরে তোড়পাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশিত হলে সর্বমহলে নিন্দনীয় আলোচনার ঝড় উঠে। অপর দিকে লিতুন ভর্তি হতে চাই এমন প্রত্যয়নপত্র নিতে তার বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের কাছে ধরনা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী।
এদিকে লিতুন জিরাকে দেখতে ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী। তিনি লিতুনের বাড়িতে গিয়ে তার পড়া-লেখাসহ যাবতীয় ব্যয়ভার ব্যক্তিগত ভাবে বহন করার ইচ্ছে পোষণ করেছেন।
জানা যায়, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পরদিন মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার শেখ পাড়া খানপুর গ্রামে লিতুন জিরার বাড়িতে যান ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী। এ সময় লিতুনসহ তার বাব-মা প্রধান শিক্ষকের সেই দিনের রুঢ় অসৌজন্য আচরনের কথা তুলে ধরেন। শুনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ইউএনও আহসান উল্লাহ শরিফী। তখন সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনও বলেন, প্রধান শিক্ষকের কৃতকর্মের দায়ভার তাকেই নিতে হবে। এর কিছুক্ষণ পর উপস্থিত হন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার। তিনিও বিষয়টি শুনে প্রধান শিক্ষকের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
এদিকে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী দাবি করেছেন লিতুন জিরা স্কুলে ভর্তি হয়েছে। কিন্তু লিতুনের বাবা হাবিবুর রহমান জানান, সকাল ১০ টার দিকে প্রধান শিক্ষক হায়দার আলী তার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বলেন লিতুন জিরা ভর্তি হতে চাই মর্মে প্রত্যয়ন পত্র নিতে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। কিন্তু লিতুন কোনো অবস্থাতেই ওই স্কুলে ভর্তি হতে ইচ্ছুক নয়। এ ঘটনায় লিতুনসহ তার পরিবারের স্বজনরা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমা খানম ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, কোনো ভাবেই প্রধান শিক্ষকের এমন আচরণ মেনে নেয়া যায় না। যশোর জজ কোর্টের এপিপি অ্যাড. বশির আহম্মেদ খান প্রধান শিক্ষকের যথাযথ শাস্তি দাবি করেছেন। সুজন (সু শাসনের জন্য নাগরিক) সভাপতি অধ্যাপক আব্বাস উদ্দীন বলেন, একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে এমন আচরণ খুবই দুঃখজনক।