নড়াইলে আবারো পেটের ভেতর থেকে ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে! নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কামঠানা গ্রামের মাদক কারবারি রমযান মোল্যা রমার (৩৫) পেট থেকে ৪৫০ পিস ইয়াবা বের করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে মলের সঙ্গে ইয়াবাগুলো বের হয়ে আসে। এর আগে তার কাছ থেকে আরো ৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। সবমিলে রমজানের কাছ থেকে ৫০০পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। রমযান লোহাগড়ার কামঠানা গ্রামের ওলফাত মোল্যার ছেলে। এর আগে গত বছর আরো দুই মাদক কারবারির পেট থেকে দুই হাজার ৪৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে পুলিশ। পেট থেকে বের করা ইয়াবাগুলো টেপ দিয়ে মোড়ানো থাকে।
লোহাগড়া থানার এসআই মিলটন কুমার দেবদাস জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে রমজানকে ৫০ পিস ইয়াবাসহ কালানাঘাট এলাকা থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রমযান জানায়, বিশেষ পদ্ধতিতে কালো ও সাদা টেপ মোড়ানো অবস্থায় আরো ৪৫০ পিস ইয়াবা গিলে ফেলেছেন তিনি। কক্সবাজারের উখিয়া থেকে পেটের ভেতরে করে ইয়াবাগুলো নিয়ে এসেছে। পরবর্তীতে থানায় এনে রমজানকে ওষুধ খাওয়ালে পেটের ভেতর থেকে একে একে ৪৫০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট বের হয়ে আসে। এই ইয়াবাগুলো নয়টি মোড়কে ছিল। প্রতিটি মোড়কে ৫০ পিস ইয়াবা রয়েছে। উদ্ধারকৃত ইয়াবার মূল্য প্রায় দেড় লাখ টাকা। রমজানের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে মাদক মামলা রয়েছে এবং ২০১২ সাল থেকে ইয়াবাসহ মাদক কেনাবেচার সঙ্গে জড়িত।
এদিকে, এর আগে আরো দুইবার পেটের ভেতরে ইয়াবা এনে নড়াইল পুলিশের হাতে ধরা পড়ে দুই মাদক কারবারি। তাদের দু'জনের বাড়িও লোহাগড়ায়। এর মধ্যে ২০১৯ সালের ১ জুন সন্ধ্যায় লোহাগড়া উপজেলার চরমল্লিকপুর গ্রামের বোরহান মল্লিকের ছেলে আল আমিন মল্লিককে (২৫) দেড় হাজার পিস ইয়াবাসহ আটক করা হয়। মাদক কারবারি আল-আমিন কক্সবাজার থেকে পেটের ভেতরে দেড় হাজার পিস ইয়াবা আনার সময় লোহাগড়া পৌরসভার আলা মুন্সীর মোড় এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে আটক করে। এছাড়াও ওই বছরের (২০১৯) ১১ এপ্রিল সকাল ৭টার দিকে ডিবি পুলিশের এসআই সেলিম রেজার নেতৃত্বে লোহাগড়া উপজেলার লক্ষীপাশা আদর্শ বিদ্যালয় এলাকা থেকে মাদক কারবারি আলমগীর মল্লিককে (৪০) ৯৫০ পিস ইয়াবাসহ আটক করে পুলিশ। আলমগীর লোহাগড়া উপজেলার দোয়ামল্লিকপুর গ্রামের মহম্মদ মল্লিকের ছেলে। আলমগীরও কক্সবাজারের উখিয়া থেকে পেটের ভেতরে ইয়াবা নিয়ে লোহাগড়ায় আসছিল।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন পিপিএম (বার) বলেন, মাদকের ব্যাপারে কোনো ছাড় নয়। জেলাকে মাদকমুক্ত করতে আমরা আন্তরিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।
এদিকে মাদক কারবারিদের ধরন বদলে যাওয়ার পরও নড়াইল জেলা পুলিশের মাদক বিরোধী কঠোর অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন পেশার মানুষ। তারা বলেন, সুদুর কক্সবাজার থেকে ইয়াবা গিলে পেটের ভেতরে বহন করার পরও পুলিশ সেগুলো চিহিৃত করে আটক করেছে। এটা নড়াইল জেলা পুলিশের ইতিবাচক মনোভাবের পরিচয় দেয়। এ ব্যাপারে পুলিশ আরো বেশি আন্তরিক হবে, এটাই সবার প্রত্যাশা।