সড়ক-মহাসড়কগুলো যেন মৃত্যুপুরী! প্রতিদিন বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল। আবার সড়ক দুর্ঘটনায় বেঁচে গেলেও পঙ্গু হয়ে জীবন কাটাতে হচ্ছে অনেককে। ঝালকাঠি নলছিটিতে বর্তমানে একশ কিলোমিটার সড়কের ১০টি সড়কেই নেই কোনো সাইন ও মার্কিং। মূলত ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক এবং সড়কে সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকায় সড়কে বেশি প্রাণ ঝরছে।
দুর্ঘটনা রোধে সারা দেশের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক চিহ্নিত করে উন্নয়ন এবং প্রয়োজনীয় বাঁকে সাইন ও মার্কিং করার নির্দেশনা থাকলেও নলছিটি উপজেলার ১০টি সড়কে নেই এসকল সাইন ও মার্কিং করার নির্দেশনার বোর্ড।
সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাইন ও মার্কিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যানবাহন কোথায় কোনো বাঁকে কি মোড় নেবে, ট্রাফিক কী নির্দেশনা দিচ্ছে, যানবাহনের গতিসীমা কত হবে-ইত্যাদি সাইনের মাধ্যমে আগে থেকেই চালক জানতে পারলে সর্তর্ক করলে দূর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়।
অন্যদিকে যানবাহনের লেন ঠিক করা এবং কোনো অংশে যানবাহন ওভারটেক করতে পারবে ইত্যাদি নির্দেশনা দেওয়া সড়কের মার্কিং করা থাকলে যেমন সুবিধা হয় পথচারীদের ও যানবাহনের।
‘জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে প্রয়োজনীয় সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপন এবং চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানসহ মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করিডর উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় এসব উদ্যোগ নেওয়া হলেও ঝালকাঠি জেলায় সড়কগুলোতে বিভিন্ন স্থানে তার কোনো চিহৃ বা দৃশ্য চোখে পড়েনা ।
প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় সাইন ও রোড মার্কিং স্থাপনসহ চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ করিডরের উন্নয়নের মাধ্যমে জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে টেকসই ও নিরাপদ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকার করছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সেতু মন্ত্রী ওবায়েদুল কাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঝালকাঠি নলছিটির ১০টি ১শ কিলোমিটার সড়কে এসকল প্রকল্প কাগজে কলমে বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে নেই কোনো চিত্র।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে এসকল প্রকল্প অফিসের চারদেয়ালের মধ্যে থাকলেও বাস্তবায়ন হয় কর্মকর্তাদের পকেটে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র জানায়, জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থা তথা টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি নিরাপদ মহাসড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার। সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, নির্ভরযোগ্য, নিরাপদ ও টেকসই অবকাঠামো নির্মাণের জন্য সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রধান চ্যালেঞ্জ।
ঝালকাঠি নাগরিক ফোরামের সভাপতি শামসুল হক মনু বলেন, আঞ্চলিক মহাসড়কের অনেকাংশে সাইন ও মার্কিং নেই। এসব কারণে অনেক সময় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। এজন্য সড়কে সাইন ও মার্কিং দেওয়া জরুরি। সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিতে এসবের গুরুত্ব অনেক। সাইন না থাকলে ভুলে অনেক সময় যানবাহন দিক হারিয়ে ফেলে। সাইন থাকলে চালক আগে থেকেই সচেতন হতে পারবেন। গাড়ির গতিসীমা ঠিক থাকবে। রোড মার্কিং হলে ওভারটেক কমে যাবে।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামিমা ইয়াসমিন বলেন, আমার জানানেই আমার সড়কে কোথাও দুর্ঘটনা হচ্ছে। আমি কোনো দূর্ঘটনার রিপোর্ট পাই নি বা আমার জানানেই। আর আমাদের এডিপির প্রকল্প চলৎ আছে। প্রকল্পের বরাদ্দ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানাতে রাজিনন বা দিবেননা এবং এ ব্যাপারে কোনো তথ্য তার কাছে ফোনে জানতে চাওয়া যাবেনা। তিনি আরো বলেন,সাংবাদিকতা সত্যকে তুলেধরা তার মানে এই নয় যে,কোন ভূল তথ্য জানাবেন আর সেটা আমরা মেনে নিবো।
ঝালকাঠি সড়ক ও জনপথ অফিস সূত্রে জানাগেছে, নির্বাহী প্রকৌশলী শামিমা ইয়সমিন গত ১মাস হয়েছে যোগদান করেছেন।