রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নে কুনই থেকে দুই হাত কেটে ফেলার মামলায় এজাহারভূক্ত দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এবিষয়ে সোমবার বিকেল তিনটায় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রেপ্তার যুবকেরা হলো আহসান হাবীব ওরফে লালু (৩০) ও শাহ আলম (২৮)। আহসান কল্যানপুর গ্রামের আমিন হক রারীর ছেলে। তিনি মামলার এজাহারভ’ক্ত চার নম্বর আসামী। অপরজন শাহ আলমের বাড়িও একই গ্রামে। তাঁর বাবার নাম সুরুজ লাঠিয়াল। শাহ আলম মামলার পাঁচ নম্বর আসামী।
আহসানকে ঢাকার শাহবাগ থানার রমনা কালিমন্দির এলাকা থেকে ও শাহ আলমকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার সুলতানপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে মামলার প্রধান আসামী ইসমাইল গাজী ও দুই নম্বর আসামী ইদ্রিস পাটেয়ারী পলাতক আছে। মামলায় মোট পাঁচ আসামীর মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
দুই হাত কুনই থেকে বিচ্ছিন্ন যুবকের নাম শাহীন খাঁন ২৮)। তিনি সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, পূর্ব বিরোধের জের ধরে গতবছরের ৪ আগস্ট শাহীনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় ইসমাইল হোসেন। এসময় তাকে কল্যাণপুর কবরস্থানের দক্ষিণ দিকে বালুর মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর দুই হাতের কুনই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। পরে আসামীরা পালিয়ে যায়। এঘটনার পরে ভূক্তভোগির বাবা বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ইসমাইল গাজীকে প্রধান আসামী করে মোট পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
প্রেসব্রিফিং চলাকালে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) ফজলুল করিম, সহকারি পুলিশ সুপার (সার্কেল) লাবীব আবদুল্লাহ, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) হিরন কুমার বিশ্বাস প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, এ ঘটনার পর থেকে আসামীর পলাতক ছিলো। তাঁরা প্রতিনিয়ত অবস্থান পরিবর্তন করছিলো। কিন্তু পুলিশও তাদের পিছনে লেগে ছিলো। আমরা অপর দুই আসামীকেও গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।
ভূক্তভোগি শাহিন খান বলেন, আমার ছোট বাচ্চা রয়েছে। স্ত্রী আছে। আমার একহাত কেটে ফেলার পরে আমার স্ত্রী ও ছোট সন্তানদের দোহাই দিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমার কথা শুনে নাই। আমার দুই হাতই কেটে ফেলেছে। এখন আমি শারীরিকভাবে অক্ষম। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি বিচার চাই। এঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ফাঁসি চাই।
শাহিন খানের মা কুলসুম বেগম বলেন, আমার ছেলের ওপর নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। প্রাণে বেঁচে থাকলেও সে মানবেতর ভাবে জীবন যাপন করছে। এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যাতে আর কোনো মাকে এমন হাহাকার করতে না হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাহীনের বড় বউ সুমীর সঙ্গে প্রতিবেশী ইসমাইলের সখ্যতা ছিলো। ইসমাইল শাহীনের বড় বউ সুমীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে গল্প করতো। এছাড়া ইসমাইল ও শাহীনের বিরুদ্ধে এলাকায় মাদক ব্যবসা করার অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে সদর থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাও রয়েছে। নিজেদের মধ্যে বিরোধের জের ধরে এই হামলা চালানো হয়েছে।