কেশবপুরের সরাপপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর গণ স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর দাখিলের পর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা অভিযোগের তদন্ত পুর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আনিছুর রহমানকে নির্দেশনা প্রদান করেন। সে মোতাবেক বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বিদ্যালয়ে তদন্ত করেন তিনি।
অভিযোগ সমূহের মধ্যে ছিলো, প্রধান শিক্ষক ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্ণীতি, এসএমসির সদস্যদের পরামর্শ ছাড়াই তিনি বিদ্যালয় পরিচালনা করেন, সিলিপের টাকা কাউকে না জানিয়ে একা একা খরচ করেন, বিদ্যালয়ের কোনো উন্নয়ন কাজ করতে হলে কমিটির কাউকে না জানিয়ে এককভাবে করার চেষ্টা করেন ও অভিভাবকদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন। তদন্তকালে উপস্থিত অভিভাবকদের পক্ষে এসএমসির সদস্য সরাপপুর গ্রামের পলি নন্দী জানান, সরকারি শিক্ষার্থীদের দেওয়ার জন্য যে পানির পট দেওয়া হয়েছে এই পানির পটের জন্য তিনি শিক্ষার্থীদের নিকট হতে ২০ টাকা করে গ্রহণ করেন এবং ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোচিং করানোর জন্য তাদের নিকট হতে ৩ শত টাকা করে গ্রহণ করেন। অভিভাবক আমেনা খাতুন জানান, আমরা বিদ্যালয়ে আসলে প্রধান শিক্ষক আমাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন। রতœা মল্লিক, শিউলী মল্লিক, বিথি খাতুন, রাধা সাহা, আছিয়া খাতুন বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বদলি চাই। বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র আল-আমীন, সেলিম হোসেন, জলিল শেখ বলেন, আমাদের সন্তানদের অন্য কোথাও প্রাইভেট পড়াতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন, আমাদের কাছে প্রাইভেট পড়াতে হবে। অন্য কোথাও পড়ানো যাবে না। এছাড়াও ওই শিক্ষক উপজেলা শিক্ষা অফিসের কোনো কর্মকর্তা বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গেলে তাদের নাস্তা ও খাওয়া বাবদ খরচের টাকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করেন। বিদ্যালয়ের সভাপতি আবদুল মালেক (মানিক) বলেন, প্রধান শিক্ষক বলেন কমিটির সদস্য আমার কোনো কাজে লাগে না। বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী না থাকলেও আমাদের চলবে। আমরা (শিক্ষকরা) বিদ্যালয় চৌকি দিলেও সরকার মাস শেষে আমাদের টাকা দেয়। এছাড়াও উপস্থিত এলাকার অনেকেই মন্তব্য করেন, আমাদের এই বিদ্যালয় সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে হলে প্রধান শিক্ষককে বদলি করা জরুরী। অভিযোগের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান জানান, এলাকার কতিপয় ব্যক্তি ষড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কমিটির বর্তমান সভাপতি আমার নিকট টাকা চেয়েছিলেন সেই টাকা না দেওয়ার কারণে যত গন্ডগল। তদন্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান জানান, আমার নিরপেক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর প্রেরণ করার পর তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।