গাজীপুরের কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজে আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহা. ওয়াজেদুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে ফরম পূরণের সুযোগ বঞ্ছিত বিপুলসংখ্যক বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী গত বৃহস্পতিবার অধ্যক্ষের অফিস কক্ষ ঘেরাও করে তাকে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে এবং ভাঙচুর চালায়।
জানা যায়, চলতি বছরে কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজে তিন বিভাগে নিয়মিত ৩৪৬ জন ও অনিয়মিত ১০০ জন এইচএসসি পরীক্ষার্থী রয়েছে। কলেজে নির্বাচনি পরীক্ষায় নিয়মিতদের মাঝে কৃতকার্য হয়েছে ২৩৮ জন। তারমধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের ২০ জন, ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ৫৯ জন ও মানবিক বিভাগের ১৫৯ জন। এতে প্রায় অর্ধেক শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি শেষ তারিখ নির্ধারণ করে কৃতকার্যদের ফরম পূরণ করানো হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জানা যায়, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহা. ওয়াজিদুর রহমান নির্বাচনি পরীক্ষায় দুই বা ততোধিক বিষয়ে অকৃতকার্য ২৩ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ফরম পূরণের সুযোগ করে দিয়েছেন। যাদের মাঝে পাঁচ বিষয়ে অকৃতকার্য ১ জন, চার বিষয়ে অকৃতকার্য ২ জন, তিন বিষয়ে অকৃতকার্য ৮ জন, দুই বিষয়ে অকৃতকার্য ৯ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এমনকি মানবিক বিভাগের একজন সকল বিষয়ে অকৃতকার্য ও বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের দুই জন শিক্ষার্থী নির্বাচনি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেও ফরম পূরণের সুবিধা পেয়েছে। কিন্তু অন্য দিকে দুই বা ততোধিক বিষয়ে অকৃতকার্য হয়ে ফরম পূরণের সুযোগ থেকে বঞ্ছিত হয়েছে প্রায় ৮৫ জন নিয়মিত শিক্ষার্থী ৷
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ দুইয়ের অধিক বিষয়ে অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের পুণরায় ১৬ জানুয়ারি পরীক্ষা দিয়ে ফরম পূরণের সুযোগ পাবে বলে নোটিশের মাধ্যমে জানান । তারা ওই দিন কলেজে উপস্থিত হয়ে জানতে পারে ইতোমধ্যে চার/পাঁচ বিষয়ে অকৃতকার্য ২৩ জনের অধিক শিক্ষার্থী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে আঁতাত করে ফরম পূরণ করেছে। এ জাতীয় অনিয়মের খবর পেয়ে দ্বিতীয়বার পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে অধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুরের চেষ্টা চালায় এবং তাকে কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে । এ সময় তারা অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে চেয়ার টেনেহিঁচড়ে বাহিরে ফেলে দেয় এবং ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সাথে দীর্ঘ সময় তাদের কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা "কাপাসিয়া কলেজ অধ্যক্ষের ঘুষবাণিজ্য বন্ধ করো", "শিক্ষাঙ্গনে দুর্নীতি চলবে না, চলবে না" বলে স্লোগান দিতে থাকে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি মাহমুদুল হাসান মামুন জানান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অনিয়মের মাধ্যমে ২৩ জনেরও অধিক শিক্ষার্থীর ফরম পূরণ করেছেন এবং এ জাতীয় ৮৫ জন শিক্ষার্থীকে ফরম পূরণের সুযোগ দেননি। এতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে অবরুদ্ধ করে রাখে এবং ভাঙচুর চালায়। কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির মাধ্যমে ন্যায় বিচারের আশ^াস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। এ বিষয়ে সভাপতির কাছে সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এ ব্যাপারে জানতে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুহা. ওয়াজেদুর রহমানের মোবাইলে যোগাযোগ করলে তিনি এ বিষয়ে পরে কথা বলবেন বলে জানান।