বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও মামলাটি নিজের ক্ষেত্রে বাতিলের দাবিতে নিহতের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও এস এম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে মিন্নির পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এফআর খান।
গত ১ জানুয়ারি রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন আদালত। বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান এ অভিযোগ গঠন করেন। পরে এই অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে জামিনে থাকা মিন্নি চলতি সপ্তাহে হাইকোর্টে আবেদন করেন।
অভিযুক্তরা হলেন- রাকিবুল হাসান রিফাত ফরাজি (২৩), আল কাইউম ওরফে রাব্বি আকন (২১), মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত (১৯), রেজওয়ান আলী খান হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয় (২২), মো. হাসান (১৯), মো. মুসা (২২), আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি (১৯), রাফিউল ইসলাম রাব্বি (২০), মো. সাগর (১৯) ও কামরুল ইসলাম সাইমুন (২১)।
এ ব্যাপারে মিন্নির আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম বলেন, রিফাত শরিফ হত্যা মামলাটি নিজের ক্ষেত্রে বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন মিন্নি। এরইমধ্যে ওই মামলায় বরগুনার আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। তাই হাইকোর্টের কাছে আবেদনটি না চালানোর কথা বলে ফেরত চাওয়া হয়। পরে আদালত আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দেন। দ্রুত এই আদালত থেকে উচ্চ আদালতে মামলাটি বদলের জন্য আবেদন করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রিফাত শরীফকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের বাধা দিয়েও স্বামীকে রক্ষা করতে পারেননি। পরে গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই বছরের ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। ১৭ জুলাই মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর কয়েক দফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। গত ২৯ আগস্ট মিন্নি হাইকোর্টে জামিন পান।