( আজ ২৮ জানুয়ারী )আধুনিক বাংলা সাহিত্যের মুকুটহীন সম্রাট বাংলায় সনেট রচয়িতা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৬ তম জন্মবার্ষিকী ও সপ্তাহব্যাপী মধুমেলার সমাপনী দিন আজ মঙ্গলবার । লাখো প্রাণের উচ্ছাসে আজ শেষ হচ্ছে সাগরদাঁড়ির সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা । মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেশবপুরের কপোতাক্ষ নদ তীরের সাগরদাঁড়িতে দেশের দক্ষিণ পশ্চিামাঞ্চলের সর্ববৃহৎ মধু মেলা শুরু হয়। ২২ জানুয়ারী থেকে শুরু হয়ে ২৮ জানুয়ারী মেলার শেষ দিন। সপ্তাহব্যাপী মধুমেলায় লাখো মধুভক্ত আর ভ্রমন পিপাশুদের পদচারণায় মেলাঙ্গণ সরব হয়ে ওঠে। মধু মেলা অশ¬ীলতামুক্ত হওয়ায় মধু ভক্তদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। মেলা আয়োজন কমিটি যশোর জেলা প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপে এবারের মধু মেলা একটি নির্মল মেলা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মেলায় আগত মধু প্রেমীরা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হাজার হাজার নারী পুরুষ শিশুসহ সব বয়সের শ্রেণীপেশার মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে মেলার মাঠে মধুমঞ্চে মন্ত্রী, এমপি ও দেশ বরেণ্য কবি সাহিত্যিকদের আলোচনা ও সাং®কৃতিক অনুষ্ঠান, উন্মুক্ত মঞ্চে যাত্রাপালা, সার্কাস দেখে এবং নাগরদোলায় চড়ে সময় কাটিয়েছেন। আবার কেউ কেউ সারাক্ষণ মেলার মাঠে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রীসহ সাংসারিক নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কেনা কাটায় ছিলেন ব্যস্ত। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মধুভক্তরা ঘুরে ফিরছেন নিরাপদে। দুরদুরান্তের দর্শকরা গভীর রাত অবধি ঘুরে ফিরছেন উপভোগ করছেন মেলা।
এবারের মেলায় প্রতিটি স্টলেই আগত মধুপ্রেমী দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে সব চেয়ে বেশি বেচাকেনা হয়েছে শিশুদের খেলনা জাতীয় দ্রব্য। রেশমী চুড়িসহ মেয়েদের সাজগোজের অন্যান্য মালামালও বিক্রি হয়েছে প্রচুর। মেলার মাঠে এবার ছোট বড় মিলে পাঁচ শতাধিক স্টল বসেছে। মেলার মাঠে মিষ্টির দোকানগুলোতে ভাজা চানাচুর, মোয়া মুড়ি, নানা জাতীয় মিষ্টির পাশাপাশি এক থেকে দেড় কেজি ওজনের রসগোল¬া বানিয়ে সাজানো হয়েছে। মধু মেলার মাঠে কৃষি প্রদর্শনীর স্টল না থাকায় অনেকেই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। শীতের নানা রকমের পিঠার পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যসহ মৌসুমি ফল, বাহারি কসমেটিক্সের দোকান, শামুক ঝিনুকের অলংকার, বই, জুতাসহ এমন কোন আয়োজন নেই যা এবারের মেলায় হাজির হয়নি। প্রতিটি স্টলেই আগত মধুপ্রেমী দর্শনার্থীদের ছিল উপচে পড়া ভিড়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার কবির জন্মবার্ষিকী ও মধুমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব নুসরাত জাহান জানান, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৬ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মধুমেলায় লাখো মানুষের সমাবেশ ঘটেছে। দর্শনার্থীরা সারাক্ষণ মেলার মাঠে সার্কাস দেখার পাশাপাশি চড়ছেন নাগরদোলায়। মেলার মাঠের স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিলো প্রচুর। সার্বিক আইন শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা সচেষ্ট রয়েছেন। তিনি আরো জানান, মধুমঞ্চে আলোচনা অনুষ্ঠানে আলোচকদের মধুসূদনের জীবন ও সাহিত্য নিয়ে যে ধরনের বক্তব্য বেরিয়ে আসছে তাতে আমাদের বাংলা সাহিত্যে মধুসূদনের অবদান চিরস্মরণীয় থাকবে। কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবু সাঈদ জানান, মেলার মাঠের পরিবেশ শান্তি পুর্ণ রাখতে সর্বাত্মক সর্তকতা নেয়া হয়েছে। মধুমঞ্চসহ গোটা মেলার মাঠ ও আশপাশের এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় রয়েছে। সমাপনি অনুষ্ঠান আজ সন্ধ্যায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদে;শ সরকারের সংষ্কৃত প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ হাসান এমপি।
মধু ভক্তদের দীর্ঘ দিনের দাবি কপোতাক্ষ নদের উপর সেতু নির্মান ও সংস্কৃতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জোরারেঅ হয়েছে। সংষ্কৃত প্রতিমন্ত্রীর মুখ থেকে সংষ্কৃত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অধির আগ্রহ । অপেক্ষা প্রধান অতিথির ঘোষণার।