রাজবাড়ীতে অল্প সময়ে ও কম খরচে শরিষা আবাদে বাম্পার ফলন হওয়ায় চাষিরা ভালো লাভবান হয়েছে। শীতের আগে বিভিন্ন ফসলি মাঠ যখন বোরো ধান আবাদের আগে পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে থাকে তখন অল্প সময়ের জন্য কৃষকেরা শরিষার আবাদ করে থাকেন। এতে একদিকে যেমনি অ-পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে না থেকে জমি চাষ হয় অন্যদিকে পরে থাকা সে জমি থেকে অল্প সময়ে শরিষার আবাদে ভালো লাভবানও হচ্ছেন চাষিরা। অনেক স্থানে আবার বিনা চাষে শরিষার আবাদ হচ্ছে, সেখানে কৃষকদের খরচ আরো কম হচ্ছে।
রাজবাড়ী জেলার পাঁচটি উপজেলার সদর, গোয়ালন্দ ও কালুখালী উপজেলাতে শরিষার আবাদ বেশি হয়ে থাকে। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী অঞ্চলে যেসব স্থানে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয় সেসব স্থানে শরিষার আবাদে ভালো ফলন পাওয়া যায়। এসব অঞ্চল এখন শরিষার হলুদ ফুলে সজ্জিত হয়ে আছে। গোয়ালন্দ ও কালুখালী এ দুটি উপজেলা পদ্মা নদী তীরবর্তি হওয়ায় এখানে শরিষা সহ সব ধরনের ফসলই ভালো ফলন হয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম, ছোটভাকলা, দৌলতদিয়া এবং কালুখালীর রতনদিয়া ও কালিকাপুরে বিভিন্ন ফসলি মাঠ এখন শরিষা আবাদে বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে। অল্প খরচ এবং কম সময়ে বোরো ধান আবাদের আগে এ শরিষা চাষ করে চাষিরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। বিঘা প্রতি মাত্র দুই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ করে মাত্র দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যেই শরিষার ফলন পাওয়া যায় বলে তারা পড়ে থাকা জমিতে এর আবাদ করে বেশি লাভবান হতে পারছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপচা নদী তীরবর্তী ফসলি মাঠে মোজাহার মোল্লা ও ইদ্রিস সরদার শরিষা আবাদ করেছেন। অল্প সময়ে ও কম খরচে এর আবাদ করে এ বছর তারা বাম্পার ফলন পেয়েছেন। বিঘা প্রতি তাদের খরচ হয়েছে দুই থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকার মধ্যে। আর প্রতি বিঘা জমি থেকে শরিষা পাচ্ছেন ৬ থেকে ৭ মণ। প্রতি মণ শরিষা দেড় হাজার থেকে আঠার শত টাকা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
আবার এ থেকে তাদের সংসারে তেলের চাহিদাও মিটে যাচ্ছে তাদের। তাদের মত অন্য কৃষকরাও শরিষা আবাদ করে বেশ ভালো লাভবান হচ্ছেন। এবছর শরিষার বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের লাভবান বেশি হচ্ছে বলে জানান তারা। বর্তমানে বোরো আবাদের আগে শরিষা আবাদ করে বোরো ধানের খরচ পুষিয়ে নিয়েছেন কৃষকেরা।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক গোপাল কৃষ্ণ দাস বলেন, রাজবাড়ীতে এ বছর শরিষা আবাদের লক্ষ মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে ৩ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে, ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৩ শত ৭৪ হেক্টর জমিতে এর আবাদ হয়েছে। বিশেষ করে বাড়ি শরিষা- ১৪, ১৫ ও বাড়ি টুরি-৭ এবং রাই শরিষাসহ স্থানীয় কিছু জাতের শরিষা আবাদ করেছে চাষিরা। তবে আবহাওয়া ভালো থাকলে কৃষকেরা তাদের কাঙ্খিত ফলন পাবে বলে জানান।