জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ইম্পাহানি এগ্রো লিমেটেড কোম্পানীর প্রতিনিধির মাঠদিবসে পরামর্শ মতে মাটির ঘর বাজারের মেসার্স এম ডি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রাশেদুজ্জামান দুলাল নামের এক কীটনাশক ডিলারের নিকট থেকে বায়োডার্মা নামক প্রাকৃতিক জৈব ছত্রাক নাশক ওষুধ আলুর জমিতে প্রয়োগ করে ২৭ জন কৃষকের প্রায় ১০ একর জমির আলু গাছের পাতা,শাখা প্রশাখা পুরে ঝলশে ও পচে গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার কৃষ্ণনগর ফকির পাড়া গ্রামের কৃষকদের এ ঘটনা ঘটে এতে ওই কৃষকদের প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ইস্পাহানি এগ্রো লিমেটেড কোম্পানীর প্রতিনিধি সবুর খান লিমন ও ডিলার রাশেদুজ্জামান দুলাল ওই এলাকার শতাধিক কৃষককে একত্র করে আলুর গাছের পচন রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য বায়োডার্মা নামক পাউডার সপ্তাহে দুইবার আলু গাছের উপরে স্প্রে করার জন্য পরামর্শ দেয়। সেই মোতাবেক ওই এলাকার প্রায় ২৭ জন আলুচাষি ইস্পাহানি এগ্রো লিমেটেড কোম্পানীর সিল ব্যবহৃত বায়োডার্মা নামক পাউডার কিনে আলুগাছের উপরে স্প্রে করার ২/৩ দিন পর আলু গাছের পাতা,শাখা প্রশাখা পুড়ে ঝলশে ও পচে গিয়ে শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কয়েক দিনের মধ্যে অধিকাংশ গাছ ও গাছের পাতা শুকিয়ে মরে যায়। একারনে গত ২৮ জানুয়ারি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা ক্ষতিপূরন দাবীসহ ওই কোম্পানীর প্রতিনিধি ও ডিলারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি অধিদপ্তরের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দাখিল করেন।
ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানায়, অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভুগী কৃষকদের নিকট থেকে জানতে পারি ইস্পাহানি এগ্রো লিমেটেড কোম্পানীর প্রতিনিধি বায়োডার্মা নামক পাউডার ব্যবহারের বিভ্রান্তিকর পরামর্শ দেয় সেই মোতাবেক কৃষক আলুর জমিতে স্প্রে করেন। পরবর্তীতে লেডব্লাইড রোগে আক্রান্ত কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের ড. জুলফিকার হায়দার।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী আফিসার আরাফাত রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কৃষি অফিসারকে সরজমিনে তদন্ত করার নির্দেশ দেই। ওই কৃষকের আলুর জমির ক্ষতি হয়েছে প্রমাণ হয়। গত ৩০ জানুয়ারি ডিলার রাশেদুজ্জামান দুলাল কে ভ্রাম্যমাণ আদালতে আওতায় এনে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং রাশেদুজ্জামান দুলালকে ওই ইস্পাহানি এগ্রো লিমেটেড কোম্পানীর প্রতিনিধিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মুখমুখি আনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ডিলার রাশেদুজ্জামান দুলাল ও কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ডিলার রাশেদুজ্জামান দুলাল বলেন, আমি ইস্পাহানি কোম্পানির বীজ ডিলার কিন্তু ইস্পাহানি এগ্রো লিমেটেড কোম্পানীর কিটরাশক ডিলার নই। ওই কোম্পানির প্রতিনিধি সবুর খান লিমন কৃষকদের মাঝে যে পরামর্শ দিয়েছিলেন সেই প্রেক্ষিতে আমার দোকান থেকে কৃষক জোর করে ওই ওষুধ কিনে নিজেরাই জমিতে স্প্রে করে।
ইস্পাহানি এগ্রো লিমেটেড কোম্পানীর প্রতিনিধি সবুর খান লিমন জানান, আমাদের বায়োডার্মা সম্পন্ন প্রাকৃতিক জৈব বালাই নাশক এটা জমিতে ব্যাহারের ৭ দিন আগে বা পরে অন্য কোনো ছত্রাক নাশক ব্যবহার করলে সঠিকভাবে কাজ করবেনা। কৃষক নিয়ম না মেনে ব্যবহার করাই এ ক্ষতি হয়েছে।