নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব ও চালিঘাট গ্রামে দুইপক্ষের সংঘর্ষে বাড়িঘর, দোকানপাট ভাঙচুর এবং আহতের ঘটনায় ঢাল-সড়কি, ধারালো অস্ত্রসহ আটজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ওইগ্রামের মোমরেজ মোল্যার বাড়ি থেকে তাদের আটক করা হয়। এদিকে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ভয় ও আতঙ্কে গন্ডব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোনো ছাত্রছাত্রী শনিবার ক্লাসে উপস্থিত হয়নি। শুধু একজন শিক্ষকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
এলাকাবাসী জানান, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জেলা পরিষদ সদস্য গন্ডব গ্রামের সুলতান মাহমুদ বিপ্লবের লোকজন হঠাৎ করে শুক্রবার (৩১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ওই গ্রামের বটতলা এলাকায় প্রতিপক্ষ মিরাজ মোল্যাসহ তার লোকজনকে মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে। পরে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে অন্তত ১০জন আহত হন। আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৫টি বাড়িঘর ও দু’টি দোকান ভাঙচুরসহ লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিপক্ষের ভয়ে মিরাজ মোল্যা গ্রুপের পুরুষেরা বাড়িঘরে যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর বাড়ির নারী ও শিশুরা আছেন আতঙ্কের মধ্যে। এদিকে শনিবার দুপুরে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভয় ও আতঙ্কের কারণে গন্ডব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো ছাত্রছাত্রী উপস্থিত হয়নি। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জো¯œা খানম জানান, কোনো ছাত্রছাত্রী আসেনি। অন্য শিক্ষকেরা অফিসের কাজে বাইরে আছেন। বিদ্যালয়ে আমি একা বসে আছি।
এলাকার শান্তিপ্রিয় মানুষেরা জানান, গন্ডব গ্রামে অনেক আগে দাঙ্গা-হাঙ্গামা হলেও প্রায় ১৫ বছর ধরে শান্ত পরিবেশ বজায় রয়েছে। হঠাৎ করে জেলা পরিষদের সদস্য সুলতান মাহমুদ বিপ্লবের ইন্ধনে গ্রামটি আবার অশান্ত হয়েছে। গন্ডব গ্রামের সন্তান ঢাকায় কর্মরত পুলিশের একজন উধ্বর্তন কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে একটি পক্ষ ওই (গন্ডব) গ্রামে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি করেছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। তবে সুলতান মাহমুদ বিপ্লব এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার পক্ষের লোকজন প্রতিপক্ষের ওপর হামলাসহ বাড়িঘর ভাঙচুর করেনি। বরং আমার লোকজনের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আমরা এলাকায় শান্তি চাই।
কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, গন্ডব ও চালিঘাট এলাকায় একটি মহল অশান্ত করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। বিনা কারণে প্রতিপক্ষের ওপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে। চেয়ারম্যান হিসেবে এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা করেও কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনসহ উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত লোহাগড়া থানার এসআই কামরুজ্জামান জানান, শনিবার দুপুরে গন্ডব গ্রামের মোমরেজ মোল্যার বাড়ি থেকে আটজনকে আটক করা হয়েছে। এ সময় ১২টি সড়কি, নয়টি ঢাল, চাপাতিসহ সাতটি ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।