নীলফামারীর জলঢাকায় অবশেষে দীর্ঘ ৫০ বছর পর অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে উপজেলার টেংগনমারী হাট। চার দশক ধরে প্রভাব খাটিয়ে কোন প্রকার বন্দোবস্ত ছাড়াই ওই এলাকার চিহ্নিত কতিপয় প্রভাবশালীদের দখলে ছিল খুটামারা ইউনিয়নের টেংগনমারী হাটের ২৭ শতক জমি। সম্প্রতি হাট ইজারাদারের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দখলদারের হাত থেকে অবশেষে উদ্ধার করা হয়। সেখানে নির্মিত ২৭ শতক জমির উপর ছিল অবৈধ দোকানঘর। ওই স্থানে বর্তমানে নির্মাণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালসহ আধুনিক মার্কেট। কর্ম সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের প্রত্যক্ষ তদারকিতে দোকানঘরগুলো বন্দোবস্ত দেয়া হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। দখলমুক্ত হওয়ায় একদিকে যেমন সরকারের রাজস্ব আয় হবে অন্যদিকে কর্মংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে সেখানকার ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে সেখানে ৯১টি দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে। হাটবাজার উন্নয়ন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবু সাঈদ শামীম জানান, সরকারী নিয়ম অনুযায়ী অবৈধ জমি উদ্ধারে আবেদন করা হয় উপজেলা প্রশাসন বরাবর। গত বছরের নভেম্বর মাসের শেষ সময়ে টেংগনমারী বাজারের চান্দিনা বীটের জমি জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে উচ্ছেদ করা হয় হাটের বেদখলে থাকা জমিগুলো। তিনি আরও জানান, এরপর সেখানে বাজার কমিটির বিধি অনুযায়ী ৬৫টি দোকানের স্থলে ৯১টি দোকান ঘর নির্মাণ করেন। দোকানঘর হাতে পেয়ে ইলেক্ট্রনিক্স দোকানের মালিক নুরুজ্জামান, সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী তহিদুল ইসলাম, মেডিসিন দোকানদার মোস্তাহারুল কবিরাজ, চাল ব্যবসায়ী মোফাখখেরুল জানান, দীর্ঘদিন একটি মহল আমাদের জিম্মি করে রেখেছিল। বিভিন্ন সময় মাসোহারার ভিত্তিতে আমরা তাদের কাছে দোকানঘরগুলো নিয়েছিলাম। বর্তমানে উপজেলা প্রশাসন হাটটি উদ্ধার করে জিম্মি দশা থেকে আমাদেরকে মুক্ত করেছেন। অন্যান্য ব্যবসায়ীর সাথে কথা হলে তারা জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল নির্মাণ হলেই এ মার্কেটের মান বহুগুনে বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয়ে হাট ইজারাদার মঞ্জুরুল আলম সিয়ামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, দীর্ঘদিন পরে হলেও দখলমুক্ত হয়েছে টেংগনমারীহাট। নিয়ম-নীতির মধ্য থেকেই বাজার পরিচালনা করা হচ্ছে। সরকার যাতে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকেও আমরা বিশেষ নজরদারী করছি। আর সেই লক্ষ্যে বাজার উন্নয়ন ব্যবস্থা কমিটির সাথে আলোচনা করে সরকারকে সহযোগিতায় ও মার্কেটটির আধুনিকায়নে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল নির্মাণে হাট কমিটি সহযোগিতা করবে। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমি গোলাম ফেরদৌস জানান, সরকারী কোন জমি বেদখল থাকবে না। যে যতবড় প্রভাবশালী হোক না কেন, অবৈধ জমি উদ্ধার করে প্রকৃত যারা ব্যবসায়ী তাদের মাঝে বন্টন করা হবে। আর এজন্য সরকারী নীতি মোতাবেক যা করা দরকার হাটের ক্ষেত্রেও তাই করা হয়েছে।