ছেলেকে খুঁজতে এসে বৃদ্ধ মোখলেছের একটি হাত কেটে নিয়ে উল্লাস করে দুর্বৃত্তরা। সে এক ভয়াবহ স্মৃতি। ৬৭ বছর বয়সে ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতা বয়ে বেড়াচ্ছেন ঝিনাইদহের হরিণাকু-ু উপজেলার বৃদ্ধ মোখলেছুর রহমান।
২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর রাতে একদল মুখোশধারী দূর্বৃত্তরা বাড়িতে হানাদিয়ে ছেলে আকুলকে না পেয়ে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে পরিবারের সদস্যরা গ্রামের মাঠের ক্যানেলের উপর থেকে ডান হাত কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় উদ্ধার করে মোখলেছকে। মারাত্মক আহত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এঘটনায় আরেক ছেলে সাইফুল ইসলাম নির্মম এঘটনার বিচারের দাবীতে পিতার বিচ্ছিন্ন হাত নিয়ে হাজির হন থানায়। মামলা করেন একই গ্রামের সাব্দার আলীর ছেলে শাহিন, ভুটার আলীর ছেলে রাসেল ও আতিয়ার রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে। বাদীর অভিযোগ পুলিশ এ ঘটনায় একজন আসামীকেও গ্রেপ্তার করেনি। এমনকি আসামীদের বাড়িতেও যায়নি। ফলে আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে হুমকী দিচ্ছে।
এদিকে এ ঘটনায় আসামীদের গ্রেপ্তার না করায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জনপ্রতিনিধিসহ পরিবারের সদস্যরা। গত ডিসেম্বর মাসের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে থানা পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শিলু ও ফলসী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান।
বৃদ্ধ মোখলেছুর রহমান অভিযোগ করেন, পুলিশ কার্যকর ভুমিকা না নেওয়ায় আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। গত সপ্তাহে উচ্চ আদালত থেকে জামিনে এসে আবারও হুমকী দিচ্ছে। এতে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে তিনি জানান।
মামলার বাদী মোখলেছুর রহমানের ছোট ছেলে সাইফুল ইসলাম জানান, তারা কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একজন মেম্বর প্রার্থীর পক্ষে কাজ করাই প্রতিপক্ষরা এঘটনা ঘটিয়েছে।
গ্রামবাসীর ভাষ্যমতে, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। তখন থেকেই দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক আবদুল জলিল বলেন, আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের পক্ষ থেকে জোরালো অভিযান অব্যাহত ছিলো। তারা উচ্চ আদালত থেকে জামিনে আছে।
হরিণাকু-ু থানার ওসি আসাদুজ্জামান বলেন, পুলিশ আসামি গ্রেপ্তারে তৎপর ছিলো। তদন্ত চলছে। দ্রুত এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।