সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ওরা। নেই কোন সামাজিক স্বিকৃতি। তারপরেও আর দশটা শিশুর মত বেড়ে ওঠছে, পাচ্ছে শিক্ষার আলোসহ সকল সুযোগ-সুবিধা। এমনকি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী সম্পর্কে জানতে পারছে। এতক্ষণ বলা হচ্ছিল রাজবাড়ি জেলার দৌলতদিয়া ঘাটের যৌন পল্লী ও এর আশপাশের এলাকার পিছিয়ে পড়া অর্ধশতাধিক শিশু কথা।
বুধবার সকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধী সৌধ কমপ্লেক্স এলাকায় শিক্ষা সফর ও পিকনিকে আসে রাজবাড়ি জেলার দৌলতদিয়া ঘাটের যৌন পল্লী ও এর আশপাশের এলাকার পিছিয়ে পড়া অর্ধশতাধিক শিশু।
সকালে রাজবাড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ শরিফ-উজ্জামান নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদীতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে বঙ্গবন্ধু ও পরিবারের নিহত সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এ সময় গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান, মুক্তি মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা বেগম, দৌলদদিয়া চাইল্ড ক্লাবের চেয়ারম্যান লিজা আক্তার, গোয়লন্দ প্রেসক্লাবের সভাপতি আজু শিকদার, সাধারন সম্পাদক শামীম শেখ, মুক্তি মহিলা সমিতির সমন্বয়কারী আতাউর রহমান মঞ্জু, সেভ দ্যা চিলড্রেনের ডেপুটি ম্যানেজার মোস্তফা কামালসহ এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সুবিধা বঞ্চিত শিশুর বঙ্গবন্ধুর সমাধী সৌধ এলাকায় পিকনিক করে, সেই সাথে বঙ্গবন্ধুর পৈৗত্রিক বাড়ী, সমাধী কমপ্লেক্স, মসজিদ, বকুলতলা চত্ত্বর, লাইব্রেরী, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজরিত স্থানসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখে।
দৌলতদিয়া চাইল্ড ক্লাবের আয়োজনে এবং গোয়ালন্দ ঘাট থানা ও মুক্তি মহিলা সমিতির সহযোগিতায় যৌন পল্লীর এসব পিছিয়ে পড়া শিশুরা শিক্ষা সফরে জাতির জনকের সম্পর্কে বিভিন্ন বিষয় জানতে পারছে।
ওই সকল শিশুরা জানান, জাতির জনকের সমাধি সৌধে আসতে পেরে আমরা খুবই খুশি ও আনন্দিত। আমরা ভাবতেই পারেনি আজকে আমরা জাতির পিতার সমাধীতে আসতে পারর। আমরা আবারো এখানে আসতে চাই। দেশের উন্নয়নে অংশীদার হতে চাই।
মুক্তি মহিলা সমিতির নির্বাহী পরিচালক মর্জিনা বেগম জানান, তারা মূলত: দৌলতদিয়া যৌন পল্লীতে বেড়ে ওঠা শিশুদের স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষা বিষয়ে কাজ করে থাকেন। তাদের এসব কাজ করতে নানা প্রতিকুলতা থাকলেও তারা ওই এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন।
রাজবাড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ শরিফ-উজ্জামান জানান, ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্যার দৌলতদিয়ার পিছিয়ে পড়া এসব শিশুদেরকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সব সময়েই সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি যেমন বেদে সম্প্রদায়, হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করেছেন তেমনি যৌন পল্লীতে বেড়ে ওঠা পিছিয়ে পড়া শিশুদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিষয়েও সহযোগিতা করে আসছেন।