রংপুর মহানগরী ও সদরের ২২৩ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিধিমালা ভঙ্গ করে বহিরাগত বদলি বাণিজ্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিকেলে মানববন্ধন করেছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা। মানববন্ধনে তাদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষনা করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি বলেন, স্থাণীয়দের চাকরি ও বদলি নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে আমি জাতীয় সংসদে কথা বলবো।
রংপুর সদর ও মহানগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় স্বার্থ সংরক্ষণ ও সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে বহিরাগত ঠেকাও মহানগর- সদর বাঁচাও শ্লোগানে বিকেল সাড়ে ৪ টায় নগরীর কাচারীবাজারে অনুষ্ঠিত মানবন্ধনে সদর ও মহানগরীর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রায় পাঁচশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশ নেন। এ সময় একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা এমপি। বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষক পরিষদের রংপুর জেলা আহ্বায়ক চব্বিশহাজারী নবদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াহেদুল ইসলাম বকুল, সদস্য সচিব মনোহরপুর ধর্মঘাট সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিকি রংপুর জেলা শাখার সভাপতি ও বড়বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো সাঈদ হোসেন, সহকারী শিক্ষক সমাজ রংপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও পুলিশ লাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো আবু শামীম, দক্ষিন বিন্যাটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো আখতারুল ইসলাম, উত্তম পুর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোতাহারুল ইসলাম, রতিরামপুর বানিয়াপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাজিকুল হক, পুর্ব গিলাবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খন্দকার রোকসানা খাতুন প্রমুখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বিধিমালায় ২০ ভাগ বহিরাগত বদলির কথা বলা হলেও সদর ও মহানগরে ৫৫ ভাগ বহিরাগত শিক্ষক বদলী করা হয়েছে। একারণে এখানে শিক্ষা ব্যবস্থার চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে পড়েছে। পদ শূন্য হচ্ছে না। মাত্র ৪ জন শিক্ষক গত নিয়োগে নিয়োগ পেয়েছে। সহকারী শিক্ষকরা পদোন্নতি পাচ্ছেন না। শুন্য পদ উপজেলা, জেলা ও ডিডি পর্যায়ে ঘোষনা করার কথা থাকলেও তা করা হচ্ছে না। শিক্ষক পদ শূণ্য হওয়ার আগেই অধিদপ্তর থেকে মোটা অংকের অর্থের বিনিমিয়ে বদলী করা হচ্ছে। ফলে এখানকার শিক্ষিত বেকাররা চাকরির সুেেযাগ পাচ্ছেন না। অনিময় এতটাই করা হয়েছে যে, দুটি স্কুলে এখন দুজন করে প্রধান শিক্ষক আছেন। এই অনিয়মের এবং বিধিমালা না মেনে করা যেসব বদলি করা হয়েছে, তাদের যদি প্রত্যাহার করা না হয়, এবং নতুন এ ধরনের বিধি বহির্ভূত বদলি বন্ধ করা না হলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
এ বিষয়ে একাত্মতা প্রকাশ করে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এসব দাবির সাথে আমি একমত। আমাদের স্থাণীয় ছেলেমেয়েদের চাকরি এবং বদলি নিশ্চিত করতে হবে। বিষয়টি আমি জাতীয় সংসদের পয়েন্ট অব নোট আকারে উপস্থাপন করবো।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহজাহন সিদ্দিকি জানান, সদর ও এবং মহানগরে এ ধরনের বদলির কারণে জটিলতা সৃস্টি হয়েছে। আর যেসব অধিদপ্তর থেকে যেসব বদলি করা হচ্ছে সেসবের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। আমরা অর্ডার ফলো করি মাত্র। বিষয়টি আমরা মন্ত্রণালয়ে অবগত করেছি। বিষয়টি নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। সেই কমিটির মাধ্যমে বদলি নীতিমালা অনলাইনের মাধ্যমে সারাবছর করার একটি বিধি নতুন করে হবে। আশাকরি তা খুব দ্রুত হয়ে যাবে। তখন আর এ নিয়ে কোন জটিলতা থাকবে না।