কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে সমিতির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে উপজেলার জোড্ডা বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভূক্তভোগীরা। গতকাল রবিবার কান্দাল উত্তরপাড়া কৃষক সমবায় সমিতির অর্থ আত্মসাৎ মামলার বাদী মনোয়ারা বেগম সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ইউপি সদস্য আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে সমিতির ২০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন।
সমিতির সদস্য ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কান্দাল গ্রামে ১৯৯০ সালে পল্লী উন্নয়ন কৃষক সমবায় সমিতি ৪০ জন সদস্য নিয়ে গঠন করে। সমিতি সোনালী ব্যাংক নাঙ্গলকোট শাখা থেকে বোরো আবাদের জন্য ঋণের মাধ্যমে টাকা নিয়ে ও সদসদ্যের চাঁদাসহ মোট ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা খরচ করে গভীর নলকূপ বসানো হয়। তৎকালীন সমিতির ম্যানেজার মোস্তফা মজুমদার প্রবাসে চলে গেলে ইউপি সদস্য আইয়ুব আলী এ গভীর নলকূপ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। এসময় প্রায় ১০ বছর আইয়ুব আলী এ গভীর নলকূপ পরিচালনা করে আয়ের ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে। এছাড়া ওই সময় কান্দাল গ্রামে বিদ্যুৎ না থাকার সুবাধে গভীর নলকূপের মিটার থেকে প্রায় ১ শ’ পরিবারকে পার্শ্ব সংযোগ দিয়ে অবৈধ ভাবে লাখ-লাখ টাকা আয় করে। সমিতির সদস্যরা আইয়ুব আলীর দুর্নীতির বিষয়ে নাঙ্গলকোট পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তিনি কয়েক বার নোটিশ দিয়ে অফিসে আসতে বললেও আইয়ুব আলী হাজির হননি। পরে ওই কর্মকর্তা সরেজমিনে কান্দাল গ্রামে গিয়ে হিসাব চাইলে বিবাদী হিসাব দিবেনা বলে জানিয়ে দেন। এনিয়ে সমিতির সদস্যগনের সাথে আইয়ুব আলীর চরম বিরোধ চলে আসছে। পরে এলাকার জনপ্রতিনিধি ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ সালীশ বৈঠক বসে। সালীশে আইয়ুব আলী মেম্বার ২০ লাখ টাকা লাভ করার কথা শিকার করলেও কোন সদস্যকে টাকা দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানায়। এর জের ধরে আইয়ুব আলী মেম্বার ও তার ছেলেরা সাধারণ বিষয় নিয়ে সমিতির সাবেক ম্যানেজার মোস্তফা মজুমদারের স্ত্রী মনোয়ারার উপর হামলা করে রক্তাক্ত জখম করে। স্থানীয় ভাবে সমাধান না হওয়ায় অর্থ আত্মসাৎ ও হামলার ঘটনায় মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-৪ মামলা দায়ের করে। মামলা নং ১৬৩/১২। দীর্ঘদিন মামলা চলার পর আদালত গত ৩১-১২-১৯ ইং আইয়ুব আলী মেম্বারের বিরুদ্ধে দুই বছরের কারাদন্ড ও ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী মনোয়ারা বেগম আরো বলেন, আইয়ুব আলী সমিতির সদস্যদের সাথে সমন্বয় করবে বলে সম্প্রতি এক মাসের অস্থায়ী জামিনে আসে। সে জামিনে আসার পর এ বিষয়ে কোন উদ্যোগ না নিয়ে উল্টো সমিতির সদস্যদেরকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে।