রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ধর্ষনের শিকার হয়ে অন্তঃসত্তা পঞ্চম শ্রেণি পড়–য়া শিশু কন্যাকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তার পরিবার। অসুস্থ ওই শিশুর জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও অর্থাভাবে হতদরিদ্র পরিবার তাকে চিকিৎসকের কাছে নিতে পারছে না। মামলাই বা কিভাবে চালাবেন তাও তারা জানেন না।
শিশুটির চাচা জানান, ওর বাপ-মা এ অবস্থায় দিশেহারা। তাছাড়া দুজনেই অনেকটা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী প্রকৃতির মানুষ। রিক্সা চালিয়ে যা আয়-রোজগার করে তা দিয়ে ওদের ৫ সদস্যের সংসারের খরচ চলে না। এ অবস্থায় মেয়েটির এ অবস্থা। যে কারণে আমি সবার অনুরোধে মেয়েটিকে আমার ঘরে এনে রেখেছি। নিজের ঘরে যা জোটে তাই ওকে খেতে দেই। কিন্তু গত সপ্তাহ ধরে ও ঠিকমতো খেতে পারে না। সারাক্ষণ শরীরে জ্বর ও ঠান্ডা লেগে থাকে। আমি নিজেও একজন দিনমুজুর। ৬ জনের সংসার। ওকে কিভাবে একটু ভালমতো খাওয়াবো বা ডাক্তার দেখাবো ?
শিশুটির বৃদ্ধা দাদী ও মা জানান, পুলিশ ধর্ষক ইয়াসিনরে ধরে জেলে দিয়েছে। কিন্তু আমরা গরীব মানুষ। মামলা চালানোর মতো সামর্থ্য আমাদের নেই। উকিল রাখতে না পারলে তো ওই ইয়াসিন জেল থেকে বাহির হয়ে আসবে। তারা আশংকা প্রকাশ করে জানান, তাদের এই ছোট মেয়েটিকে তারা হয়তো বাঁচাতে পারবে না। তারা তাদের মেয়ের জীবন রক্ষা করা ও অপরাধীর কঠিন শাস্তির জন্য সরকারের কাছে দাবী জানান।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, শিশুটির পরিবার সরকারী জায়গায় ভাঙ্গাচোরা একটি ঘরে খুবই মানবেতরভাবে জীবন-যাপন করে। ৪ মাস আগে এক সন্ধ্যায় তার ছোট ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিকে তাকে ধর্ষণ করে গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামের মৃত নবু মন্ডলের ছেলে ইয়াসিন মন্ডল (৩৫)। এতে সে অন্তঃসত্তা হয়ে পড়ে। গত বুধবার সাড়ে চার মাসের অন্তঃস্বত্তা ওই কিশোরী গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযুক্ত ধর্ষনকারী ইয়াছিন মন্ডলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। আদালতে সে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে। পেশায় কাঠমিস্ত্রি ইয়াসিন বিবাহিত ও দুই সন্তানের জনক।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, মামলা দায়েরের সাথে সাথে আমরা অভিযুক্ত ইয়াছিন মন্ডলকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি। অন্তঃসত্তা ওই শিশুটির মানবিক সাহায্যার্থে আমি সাধ্যমত পাশে দাড়াবো। সেই সাথে আমি বিভিন্ন আইনী ও সেবা সংগঠনগুলোর প্রতি শিশুটির পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ জানাচ্ছি।