কক্সবাজারের টেকনাফে সাগরপথে অবৈধভাবে বিদেশ পাড়ি দেওয়া থামানো যাচ্ছেনা। বঙ্গোপসাগরে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার ডুবির ঘটনায় কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে মৃত অবস্থায় ১২ জন রোহিঙ্গা নারী, ৩জন শিশু এবং জীবিত ৭২ জনসহ মোট ৮৭ জনকে উদ্ধার করেছে। এই অপরাধে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১১ ফেব্রুয়ারী (মঙ্গলবার) ভোরে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্বজোনের সেন্টমার্টিন বিসিজি ক্যাম্পের একটি দল গত ১০ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যারদিকে বাহারছড়া উপকূল হয়ে ছেড়ে আসা ২টি ট্রলার অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়ার কারণে সেন্টমার্টিন সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরের অদূরে ভোররাতে ডুবোচরে আটকে দূঘর্টনার কবলে পড়ে। ট্রলারে থাকা জনৈক আব্দু ৯৯৯নম্বরে কল করে বাঁচার আকুতি জানানোর সংবাদ পেয়ে কোস্টগার্ড সাগরে উদ্ধার অভিযানে যায়। এ সময় ১টি ট্রলার ডুবে গেলেও অপর ১টি ট্রলার এবং সাগর হতে ভাসমান ১২ জন নারী, ৩ জন শিশুর মৃতদেহ এবং ৪৬ জন নারী, ২২ জন পুরুষ ও ৪ জন ছেলে শিশুসহ ৭২ জনকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিন জেটিতে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়। তাছাড়া দালাল সন্দেহে কুতুপালং ক্যাম্প সি-৩ এর বাসিন্দা আবদুস সালামের পুত্র আজিজ (৩০), বালুখালী বি-৩এর বাসিন্দা কবির হোসেনের পুত্র ওসমান (১৭), নোয়াখালী পাড়ার হাসান আলীর পুত্র ছৈয়দ আলম (২৭) এবং একই এলাকার ফয়েজ আহমদের পুত্র উলা মিয়াকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উদ্ধারকৃতরা জানায়, তারা দেড়শ যাত্রী ছিল বলে জীবিতরা জানান। উদ্ধারকৃত এসব রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষেরা উখিয়া-টেকনাফের কুতুপালং, বালুখালী, শামলাপুর, জাদিমোরা, নয়াপাড়া ও লেদাসহ বিভিন্ন ক্যাম্পের বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ কোস্টগার্ড পূর্বজোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেঃ কমান্ডার শুভাশিস দাস জানান, এখনো পর্যন্ত ১৫জন নারী-শিশু মৃত এবং ৭২জন নারী,পুরুষ ও শিশুকে জীবিত উদ্ধার করে সেন্টমার্টিনে এনে প্রাথমিক চিকিৎসা ও খাবার দিয়ে রাখা হয়েছে। পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন মহলের নির্দেশনার আলোকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. এবিএম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন, প্রতি বছর শীতকাল আসলেই মানবপাচার বেড়ে যায়। কারণ দালালরা এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে মানবপাচার শুরু করে। তবে সম্প্রতি সময়ে যারা এই কাজে পা দিয়েছে তারা সিংহভাগেই রোহিঙ্গা। মূলত স্থানীয় ও কিছু রোহিঙ্গা দালালরা নানা প্রলোভন দিয়ে রোহিঙ্গাদের পাচার করছে। পুলিশ সুপার আরো বলেন, ১১ ফেব্রুয়ারি পাচারের সময় যেসকল রোহিঙ্গা ট্রলার ডুবিতে মারা গেছে তাদেরকে টেকনাফের বাহারছড়া ও উখিয়া-টেকনাফের মাঝামাঝি সীমান্ত পয়েটে দিয়ে বোটে তুলা হয়েছিল।