রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে এক শিক্ষক ও আওয়ামীলীগের নেতার বিরুদ্ধে হোটেলে অসামাজিক কার্যকলাপের সময় ভ্রাম্যমান আদালতে কারাদন্ডের ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অসামাজিক কর্মকান্ডের দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হতে পারেন ওই শিক্ষক। এরই মধ্যে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৩দিনের বেতন কর্তন করেছেন বলে জানা গেছে।
অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম, আহম্মদ আলী। তিনি রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক ও ইসলামপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি। সে ইসলামপুর ইউনিয়নের বারমল্লিকা গ্রামের লোকমান সেখের ছেলে। তিনি গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতিকের প্রার্থী হয়ে অল্প কিছু ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।
নথি সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট শাহ্ মোঃ সজিব গত ১৬ জানুয়ারী হোটেল নিউ গার্ডেন সিটি ( আবাসিক) মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন। হোটেল নিউ গার্ডেন সিটিতে ইশারা ইঙ্গিতের মাধ্যমে অন্যের বিরক্তি উদ্রেক করে প্রকাশ্য স্থানে অশ্লিল ও অসামাজিক কাজ করা অবস্থায় আহম্মদ আলীকে হাতে নাতে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর ধারা ৭ (১) মোতাবেক অভিযোগ গঠন করা হয়। সে অশ্লীল ও অসামাজিক কার্যকলাপের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে। অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ২৯৪ (ক) ধারা এবং মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ এর ৭(২) ও ৮(১) ধারায় আহম্মদ আলীকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। পরে আহম্মদ আলী আপীল করে জামিনে মুক্তি পান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আহম্মদ আলীর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলীম উদ্দিন শেখ বলেন, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত থাকায় ৩ দিনের বেতন কর্তন করা হয়েছে। আমার হাতে এখন পর্যন্ত কোন প্রমান হাতে আসেনি। প্রমান পেলে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী এজাজ কায়সার বলেন, রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আহম্মদ আলীকে ভ্রাম্যমান আদালতে যে সাজা হয়েছে তার কোন প্রমান না পাওয়ায় ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেনি। তবে প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামদিয়া বিএমবিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো: আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষক আহম্মদ আলী বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে ৩দিন অনুপস্থিত ছিল। বিনা ছুটিতে অনুপস্থিত থাকায় তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ৩ দিনের বেতন কর্তন করা হয়েছে। পরে জানতে পারে তিনি ফরিদপুর একটি অনৈতিক কর্মকান্ডের দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত হয়েছেন। আজ তার দন্ডাদেশের নকল কপি হাতে পেয়েছি। ঘটনার সত্যতা থাকায় আগামী সভায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। তিনি চাকরী থেকে সাময়িক বরখাস্ত হতে পারেন বলেও তিনি জানান।