২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে নির্মাণ কাজের মেয়াদ শেষ হওয়া সত্ত্বেও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত না হওয়ায় আঞ্চলিক মহাসড়কের নতুন ব্রিজটি চালু হয়নি। ফলে ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় পুরনো ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ দিয়েই প্রতিদিন শতশত ভারী যানবাহন, অটো রিকশা, কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ হাজারো মানুষ চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজে ভারী যানবাহন উঠলেই তা কেঁপে উঠছে। যানজট হয়ে দাঁড়িয়েছে নিত্যদিনের সঙ্গী। রয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
জানা গেছে, পৌরশহরের সুন্দরগঞ্জ-মীরগঞ্জ-রংপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ডাক বাংলো খালের উপর ৮০’র দশকে নির্মিত ব্রিজটির পশ্চিমাংশের একটি পিলার বেঁকে যাওয়া, অপর একটি পিলারের সম্পূর্ন অংশে বড় ধরনের ফাটল, নীচের অংশে পলেস্তারা ধ্বসে পড়াসহ উপরের অংশের ঢালাই ধ্বসে পড়ে দুই মিটার দু’টি বৃত্তাকার গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য অনুপযোগী হওয়ায় এলজিইডি,পীরগাছার তত্ত্বাবধানে আওতায় ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির দক্ষিণ পাশে ৮০'র দশকের পূর্বে ভেঙ্গে ফেলা পুরনো ব্রিজের স্থলে নতুন একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। এতে কাজ পায় 'মেসার্স হোসাইন এন্টারপ্রাইজ' নামে রাজশাহীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে ১১ মার্চ ২০১৭ সালে ৩ কোটি ৫ লাখ ৯৩ হাজার ২'শ ৮৮ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটির ১০০ মিটার দক্ষিণ পাশে ৮৫ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গ্রিডার ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করলেও নির্ধারিত সময় ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা দৃশ্যমান না হওয়ায় বিগত বছরের ২২ জানুয়ারী প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকায় 'সুন্দরগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজ ; দুর্ঘটনার আশঙ্কা ' শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। সংবাদ প্রকাশের দু'দিন পরেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি দ্রুতগতিতে কাজ শুরু ও বিদায়ী বছরের শেষার্ধে যথাযথ মান অনুযায়ী ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শেষ করে।
কিন্তু ৮০'র দশকে পরিত্যক্ত সরকারি রাস্তাটি স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তির দখলে থাকায় সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে। অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ ব্রিজটি চালু হলে একদিকে যেমন বিভাগীয় শহরে যাতায়াতে ১০ কিঃমিঃ রাস্তা কমে যাবে, অন্যদিকে তেমনি বাঁচবে সময় ও অর্থ।
নর্দান বাংলাদেশ ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (নবিদেপ)'র উপ-প্রকল্প পরিচালক রংপুর-মাহমুদ জামান ও আবাসিক প্রকৌশলী - বিজয় কুমার দাস মঙ্গলবার নতুন ব্রিজটি পরিদর্শনে এলে কথা হয় এ প্রতিবেদকের সঙ্গে। তারা জানান, “ব্রিজের পশ্চিমাংশের শুরুতে বাবলু চন্দ্র সরকারের দোকানঘরটি সরাতে রাজি না হওয়ায় সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি আমরা সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌর মেয়র ও সহকারি কমিশনা (ভূমি) কে জানিয়েছি। আশা করি অতি দ্রুত সময়ে ঘরটি সরিয়ে দিয়ে সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শেষে ব্রিজটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে পারব।” উপজেলা প্রকৌশলী পীরগাছা-রংপুরের মনিরুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনিও একই কথা বলেন।