মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম কাজী এমদাদুল হকের। বাবা মারা যাওয়ায় এইচএসসি’র পর পড়াশোনাও হয়নি। সংসারের হাল ধরেছেন, পড়াশোনা করিয়েছেন ছোট ভাইদের।
সামর্থ্য অনুযায়ী সমাজ ও প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের উন্নয়নে কাজ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা ইউপির দৌলতপুরের কাজী আবদুল ওয়াহেদের ছেলে এমদাদ।পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে নাইট স্কুল প্রতিষ্টাতা করেছেন তিনি। তার প্রচেষ্টার এরইমধ্যে চারটি গ্রামের মানুষ নিরক্ষরতামুক্ত হয়েছে। বিনামূল্যে পরীক্ষা করিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষের রক্তের গ্রুপ ও ডায়াবেটিস। কম খরচে চাষাবাদ ও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে পরিবেশবান্ধব জৈব সার ও জৈব কীটনাশক তৈরির প্রশিক্ষন দিচ্ছেন। বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা শিবির ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা দিচ্ছেন প্রতি বছর। ঈদে নাইট স্কুলের শিক্ষার্থীদের মাঝে উপহার বিতরণ ও ছিন্নমূলদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাখি শিকার রোধে গাছে গাছে ঠিলে বেঁধে দিচ্ছেন, নোটিশ টাঙিয়ে দিচ্ছেন। সবগুলো কাজ করছেন বাবার নামে গড়া কাজী আবদুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের ব্যানারে।
কাজী আবদুল ওয়াহেদ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী এমদাদুল হক। তিনি বলেন, আমি সব সময় প্রান্তিক পর্যায়ের পিছিয়ে পড়া মানুষকে নিয়ে ভাবি। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে সবসময় সব কাজ করতে পারি না। তবু দায়বদ্ধতা ও মনের জোর নিয়ে এগিয়ে যাই। এ কারণে সামর্থ্যবানদের সহায়তা পাই।
মানবকল্যাণে এগিয়ে আসায় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষ স্বাগত জানিয়েছেন কাজী এমদাদকে।
দৌলতপুর গ্রামের কৃতী সন্তান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, মানুষের কল্যাণে সব সময় সবার আগে কাজী এমদাদকে পাওয়া যায়। বিত্তবানরাও সামর্থ্য অনুযায়ী তার ফাউন্ডেশনকে সবসময় সহায়তা করছেন। কোলা ইউপি চেয়ারম্যান আইয়ুব হোসেন মোল্যা জানান, প্রথম দিকে কাজী এমদাদের সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ অনেকেই বাঁকা চোখে দেখতেন। অনেক বাধা এসেছে, তবু পিছু হটেননি এমদাদ। মনের জোর আর স্বল্প সামর্থ্য নিয়েই এগিয়ে গেছেন। এখন তার পাশে আছে সামর্থ্যবান হাজারো মানুষ।
কালীগঞ্জের ইউএনও সূবর্ণা রাণী সাহা জানান, কাজী এমদাদুল হক সমাজ, পরিবেশ ও মানুষের কল্যাণে যা করছেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসা দাবিদার। উপজেলা প্রশাসন তাকে সার্বিক সহযোগিতা করছে। ভালো কাজের জন্য তাকে ‘সাদা মনের মানুষ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।