ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার রাওনা ইউনিয়নের পাঁচুয়া (জব্বার নগর) গ্রামে অবস্থিত ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি সারা বছরই দর্শক শূন্য থেকে যায়। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের শহীদের স্মৃতি রক্ষায় ২০০৮ সালে ১৯ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় উপদেষ্টা আনোয়ারুল ইকবাল এবং ভাষা সৈনিক আবদুল মতিন, ভাষা সৈনিক বেগম রওশন আরা ও ভাষা সৈনিক ডাঃ হালিমা খাতুন গফরগাঁওয়ের পাঁচুয়া গ্রামে ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের বসতবাড়ির আঙ্গিনায় নির্মিত জব্বারের নামে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন। ৪ হাজার ১৩৫টি বই নিয়ে যাত্রা শুরু করা গ্রন্থাগারে বার বছরেও আর কোনো বই যোগ হয়নি। এই জাদুঘরে নেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটিও। জাদুঘরেও নেই ভাষা শহীদের কোনো স্মৃতি চিহ্ন। নানা অব্যবস্থাপনায় দর্শনার্থী ও পাঠকদের চাহিদা পূরণ করতে পারছে না এটি। এখানে নেই ইন্টারনেট সেবা। মাঝে মাঝে সরকারি বিভিন্ন সেবামুলক কর্মসূচি পালন করা হয়। বছরের বেশীর ভাগ সময়ই ফাঁকা পড়ে থাকে গ্রন্থাগারটি। শুধু ফেব্রুয়ারি মাস আসলেই দেখা মিলে দর্শনার্থীদের ভিড় এবং প্রিন্ট, অনলাইন ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের কর্মব্যস্থতা চোখে পড়ে।
স্থানীয় বাসিন্দা রিপন বলেন, এখানে যদি ভাষা শহীদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় করা হয় তাহলে জব্বার নগর পরিপূর্ণতা পাবে। জাদুঘরের গ্রন্থাগারিক মোঃ কায়সারুজ্জামান জানান, জাদুঘরে ভাষা শহীদের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং বইয়ের সংখ্যা বাড়ানো গেলে পাঠক-দর্শনার্থীদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে। ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের একমাত্র ছেলে নুরুল ইসলাম বাদল বলেন, ভাষা শহীদের নামে এখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় করা হলে গ্রন্থাগারটির প্রাণ সঞ্চার হবে।
ভাষা শহীদ আবদুল জব্বারের স্মৃতি গাঁথা নিদর্শনগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণ এবং গ্রন্থাগারে তথ্যপ্রযুক্তি সুবিধা চালু করার দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। সেই সাথে ২০০৮ সালে ভাষা শহীদের গ্রামের নাম জব্বার নগর রাখা হলে ও এত দিনেও সরকারি গেজেট প্রকাশ করা হয় নাই।
রাওনা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ সাহাবুল আলম বলেন, দর্শনার্থী বাড়ানোর জন্য আমি আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি কেন্দ্র করে এলাকার মানুষ বিভিন্ন সেবামূলক সহায়তা পেয়ে থাকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মাহবুব উর রহমান বলেন, আমরা অবগত আছি কি করলে ভাষা শহীদ আবদুল জব্বার গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরটি আরো পরিপূর্ণতা পায় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং দর্শনার্থী বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন ভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।