লক্ষ্মীপুরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানটির ৪৮ বছর ঘিরে ওই স্থানে অনুষ্ঠিত হয়েছে দোয়া মিলাদ মাহফিল। বৃহস্পতিবার বিকালে স্মৃতি বিজড়িত রামগতির চর পোড়াগাছা স্থানটির মোহাম্মদ উল্যাহর সদাগরের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য দোয়া মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,ড্রপ চেয়ারম্যান এ এইচ এম নোমান, বিশেষ অতিথি রোকেয়া ইসলাম, ফেরদৌস। ভাইস চেয়াম্যান ফাতেমা ফারুক,মোহাম্মদ আজহাব আলী তালুকদারসহ স্থানীয় এলাকাবাসী। বক্তরা জানান,এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পাবার পর সর্ব প্রথম হেলিকপ্টার যোগে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর পোড়াগাছা এ গ্রামটিতে আসেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষায় ৪৮ বছরেও কোন স্থাপনা নির্মান না করায় স্থানীয়দের মধ্যে অসস্তোষ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত স্থানটিতে স্থানীয়রা ‘বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লা স্বপ্ন কমপ্লেক্স’ নির্মানের দাবী জানিয়ে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে।
১৯৭২ সালে ২০ ফেব্রুয়ারী সেদিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংক্ষিপ্ত ভাষণ শেষে ওড়া-কোদাল হাতে নিয়ে স্বহস্তে মাটি কেটে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা নির্মানের কাজ উদ্বোধন করেন।
স্থানটি রামগতি-নোয়াখালী আঞ্চলিক সড়ক হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে এবং বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত স্থানটি ‘শেখের কিল্লা’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে। এই কিল্লাকে ঘিরে পরবর্তীতে পাশেই গড়ে উঠেছে দেশের প্রথম ‘গুচ্ছগ্রাম’।
গত ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত শেখের কিল্লা স্থানটি পরিদর্শণে আসেন। স্থানীয় সুধি সমাবেশে ভূমি মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু পদদুলিত সঠিক স্থানটি চিহ্নিত করে ‘শেখের কিল্লা স্মৃতি স্তম্ভ’ নির্মানের আশ্বস দিলেও এখন পর্যন্ত কোন কাজ শুরু না হওয়ায় স্থানীয়দের মনে চাপাক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থাটির গুরুত্ব ও ইতিহাস তুলে ধরতে বেসরকারি সংস্থা ‘ডর্প’ এর উদ্যোগে কয়েক বছর পূর্বে ‘শেখের কিল্লা মাইলষ্টোন’ স্থাপন করা হয়েছে যা এলাকা ও দেশ-বিদেশের পথচারীদের দৃষ্টি আকর্ষিত হচ্ছে। এ বিষয়ে ডর্প এর প্রতিষ্ঠাতা ও সেদিনের নেতৃত্ব ও অংশগ্রহণকারী এএইচএম নোমান। তিনি জানান, সেদিন ‘ দেশ গড়ার ডাক’ দিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কিল্লায় দাঁড়িয়ে গগণবিদারী কন্ঠে বলেছিলেন ‘ দেশ আমাদেরকেই গড়তে হবে, উৎপাদন বাড়াতে হবে, প্রত্যেক বাড়ীতে একটি করে গাছ হলেও লাগাতে হবে। স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে দেশ গড়া ও অর্থনৈতিক মুক্তি আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে’। তিনি আরো জানান, এই অঞ্চলের মানুষের একাস্ত আশা-আবেদন ‘শেখের কিল্লা’ স্থানে একটি স্বপ্ন স্মৃতি স্তম্ভ, পর্যটক রেষ্ট হাউজ, স্থানীয় কৃষ্টি কালচার, তাঁর ভাষণ ইতিহাসসহ পাঠাগার সম্বলিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লা স্বপ্ন কমপ্লেক্স’ স্থাপন করার।
এতে করে স্থানটির গুরুত্ব তৈরী হবে এবং মেঘনার নদীসহ একটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে উঠবে।
স্থানীয়ভাবে গড়ে ওঠা ‘বঙ্গবন্ধু শেখের কিল্লা স্মৃতি ইতিহাস রক্ষা কমিটি’র সদস্য সচিব মো:মোমিন উল্যাহ জানান, ২০ ফেব্রয়ারি রামগতিতে বঙ্গবন্ধুর আগমনের ৪৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে শেখের কিল্লা মাইলষ্টোন’ পাদদেশে সার্বজনীন কর্মসূচি পালন করা হয়।
তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি রক্ষা করতে গিয়ে এলাকার উন্নয়ন হবে। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে সঠিক স্থানে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মানের জন্য সরকারের কাছে জোড় দাবী স্থানীয়দের। ইতোমধ্যে ১৯৭২ সনের ভাষার মাসের ২০ ফেব্রয়ারি তাদের প্রেরণা।