কুড়িগ্রামে অন্ধকারে অবহেলায় পড়ে থাকা একটি শহীদ মিনারে মোমবাতি জ¦ালিয়ে মহান অমর ২১ শে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে। উপজেলা প্রেসক্লাব ও জাতীয় শ্রমিক জোট ফুলবাড়ী উপজেলা শাখা নামের দুইটি সংগঠনের পক্ষ থেকে অন্ধকারাচ্ছন্ন অবহেলিত শহীদ মিনারে ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২ টা ১ মিনিটে মোমবাতির আলোয় পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
৫২ এর ভাষা আন্দোলনের বিনিময়ে আজ আমরা গর্বিত বাঙালি হয়েছি। সেদিনের ভাষা অন্দোলনে শহীদ ভাষা সৈনিকদের স্মৃতি স্মরণে নির্মিত শহীদ মিনারকে দেখে বাঙালি জাতি বাংলা ভাষাকে পাওয়ার জন্য ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি স্মরণ করে।
এই শহীদ মিনারে প্রতিবছর মহান ২১ফেব্রুয়ারিতে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়াও মহান স্বাধিনতা ও বিজয় দিবসেও দেশের বিভিন্ন স্থানে এই শহীদ মিনারে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের বিন¤্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়ে থাকে।
এই গুরুত্বপূর্ণ শহীদ মিনার যদি অবহেলিত থাকে তাহলে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি করে। দেশ স্বাদিনের পরেই কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় প্রথম নির্মিত এমনি একটি অবহেলিত শহীদ মিনার নিয়ে জনমনে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
ফুলবাড়ী থানা ও ফুলবাড়ী জছিমিঞা মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সন্নিকটে অবস্থিত উপজেলার প্রথম এই শহীদ মিনারটি এখন থাকছে চরম অবহেলায়। শহীদ মিনারটির অবকাঠামোগত দিক ও অবস্থানটি ভালো থাকলেও এখানে কেউ আর পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন না। স্থানীয় কাচারী মাঠে অন্য একটি শহীদ মিনাওে পুষ্পস্তবক অর্পণ করছেন তারা।
এই শহীদ মিনারটিকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাও হয় না। স্বাধিনতা দিবস, বিজয় দিবসে কোন রকম চুনকাম করা হলেও এবারের মহান ২১ শে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারটিকে রাখা হয়েছে সম্পূর্ণ অযতœ ও অবহেলায়। অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থায় রাখা হয়েছে শহীদ মিনারটিকে।
২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারকে সম্মান দেখানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন হলেও স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবর্গ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এমনকি স্থানীয় প্রতিনিধিরাও ভূলে গেছেন এই শহীদ মিনারটিকে। তারা এই শহীদ মিনারটিতে পুস্পস্তবক করেননি।
স্থানীয় জাতীয় শ্রমিকজোট নেতা লুৎফর রহমান সরকার বলেন, আমরা ফুলবাড়ী উপজেলার প্রথম শহীদ মিনারটিতে শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের জন্য শ্রদ্ধা নিবেদনে আসি।
এসে দেখতে পাই শহীদ মিনারটি অন্ধকারাচ্ছন্ন। পরে মোমবাতি জ¦ালিয়ে শহীদ মিনারটি পরিষ্কার করে ভাষা শহীদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করি। একটি শহীদ মিনার এভাবে অবহেলায় পড়ে থাকা বড় দুঃজনক। তিনি শহীদ মিনারটির সম্মান ফেরাতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।
ফুলবাড়ীর উপজেলার সন্তান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাধে অন্ত রায় বলেন, আমি ঢাকা থেকে বাড়ি এসেছি। এবার মহান শহীদ দিবস ও আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ফুলবাড়ীতে পালন করতে এসে দেখি ফুলবাড়ী উপজেলার প্রথম শহীদ মিনারটি অন্ধাকারে ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে।
আমি নিজ হাতে শহীদ মিনারটি পরিষ্কার ও মোমবাতি জ¦ালানোর সহযোগিতা করি। তিনি ফুলবাড়ীর প্রথম শহীদ মিনারটিকে যথাযথ সম্মান দেখানোর জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
স্থানীয় উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ইউসুফ আলী সংগ্রামী বলেন, ফুলবাড়ী উপজেলার প্রথম শহীদ মিনারটি বাদ দিয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ অন্যান্যরা কাচারী মাঠ সংলগ্ন আর একটি শহীদ মিনারে বিভিন্ন দিবসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করায় উপজেলার প্রথম শহীদ মিনারটি অবহেলায় পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার সংগঠন উপজেলা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে এই শহীদ মিনারটির সম্মানে ও শহীদদের বিন¤্র শ্রদ্ধায় পুষ্পস্তবক অর্পণ অব্যাহত রাখবেন। পাশাপাশি সকলকে ফুলবাড়ী উপজেলার প্রথম শহীদ মিনারটিকে সম্মান দেখানোর আহবান জানান।