অনেক সময় ভালো কাজের প্রশংসা ও সুনাম বলার কারণে অনেকেই ইহাকে তোয়াজ, তোষন ও চাটুকারীতা মনে করে থাকে। আবার অনেকে এসব কিছুর পেছনে স্বার্থসিদ্ধি ও কোনো ধরণের ধান্ধা থাকার কথাও মনে করে থাকে। অনেক সময় এমন ধারণা অমূলক নাও হতে পারে। তদোপরি অনেকেই আবার এ ধরণের বেরসিক অপসংস্কৃতি ও লালসা থেকে দূরে অবস্থান করে বলেও সন্দেহ নেই। সংখ্যার দিক দর্শনে তোয়াজ, তোষন অনেকের এ ভাবনাকে একেবারে খাটো করে দেখারও সুযোগ নেই। অনেকেই আবার অন্যের ভালো কাজকে যেমন সাধুবাদ জানায়, তেমনি কারও মন্দ কাজকে নিন্দা, ঘৃণা, ধিক্কার ও নিরোৎসাহিত করতেও কার্পন্য করে না। আবার যাদের নাম ও পদবীর পাশে ক্ষমতার অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি, বেলাল্লাপনা ও স্বেচ্ছাচারিতার দুর্গন্ধ রয়েছে তাদের যখন মারহাবা ও প্রশংসা করা হয় তখন প্রশংসাকারীকে এ ব্যাপারে সন্দেহ করলে অপবাদ ও ধিক্কার জানালে বা থুথু বাবা বললে তাতে দোষের কিছু না থাকারই কথা।
প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে লাগাম টেনে ধরেছেন যদি তা প্রতিফলিত হয় তা প্রশংসা পাওয়ার কথা। আর যদি কোনো কারণে তা ব্যাহত হয় বা প্রতিফলিত না হয় তবে দায়ীদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করলে দোষের কিছু না থাকারই কথা। মেজর জেনারেল (অবঃ) এম.এ মতিন এক সময় দুর্নীতি দমন ব্যুরোর ডিজি ছিলেন। ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় মন্ত্রীর মর্যাদায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, এবার পুঁটি মাছ ধরবো না রুই, কাতলা, বোয়াল মাছ ধরা হবে। ক্ষমতা যাওয়ার পর চট্টগ্রাম বন্দরের টেন্ডার কেলেংকারীতে তিনি নিজেই ফেঁসে যান। সূত্রে জানা যায়, পরবর্তী সময় উচ্চ আদালতে এ ব্যাপারে মামলা হলে তাকে নাকি ১০০ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ২০০৪ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরো থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) হওয়ার আগ পর্যন্ত ব্যুরো অব এ্যান্টি করাপশান নিয়েও রয়েছে অনেক আলোচনা, সমালোচনা, জটিলতা ও মানুষকে ফাঁদে ফেলে ক্যামোফ্লেক্সের মাধ্যমে অসাধুদের টাকা বানানোর ফন্দি ফিকির ও কারখানা। তখন এ বিভাগের একজন পিয়ন থেকে শুরু করে কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মানুষকে মানুষ বলে মনে করত না।
তাদের ভাবনা ও গর্ব ছিল ওরাই ভালো মানুষ ও দুর্নীতিমুক্ত। আর দেশের সবাই যেন কোনো না কোনভাবে দুর্নীতির সাথে যুক্ত। তখন মহকুমা দুর্নীতি দমন কর্মকর্তাকে বলা হত সাকো এবং জেলা কর্মকর্তাকে বলা হত ডিস্ট্রিক এ্যান্টি করাপশন অফিসার বা ডাকো। তাদের হাবভাব ও কথার বাহাদুরী দেখে মনে হত মহকুমা ও জেলার অন্যান্য কর্মকর্তা যেন তাদেরই অধীনস্থ কেউ। যদিও পদমর্যাদায় সাকো ও ডাকো ছিল মহকুমা ও জেলার অনেক কর্মকর্তাদের চেয়ে নীচের গ্রেডের। তদোপরি মহকুমার এসডিও, এসডিপিও, জেলার ডিসি, এসপি পদধারীদের সাথে তাদের গ্রেডের তুলনার সুযোগই ছিল না। সেই আমলে কিশোরগঞ্জ মহকুমা সাকো ও পরবর্তী সময়ে জেলা ব্যুরো অব এ্যান্টি করাপশন অর্থাৎ ডাকোর অফিস ছিল গাইটাল হর্টিকালচার
ফার্ম সংলগ্ন। যেখানে রাত ১০/১১টা পর্যন্ত উক্ত অফিস বাণিজ্য বিতানের মতো খোলা দেখা যেত। যা ভূক্তভোগী ছাড়া এ যাতনা বুঝানো বাস্তবিকই অসম্ভব।
২০০৪ সালে ব্যুরো অব এ্যান্টি করাপশন বিলুপ্ত হলে তদস্থলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। বর্তমানে দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে ইকবাল মাহমুদ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এক সময় সাবেক সেনাপ্রধান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হাসান মশহুদ চৌধুরী দুদকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকেন। জানা যায়, দুদক থেকে বিদায়ের সময় তিনি দুঃখ করে বলেছিলেন, আই এম টায়ারড, আন অ্যাবুল এন্ড আনডান। অর্থাৎ আমি ক্লান্ত অসমর্থ ও অপারগ হয়ে চলে যাচ্ছি। দুর্নীতিবাজদের হাত খুবই লম্বা এবং ওরা মাফিয়া চক্রের মতো শক্তিশালী। বর্তমান দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ দায়িত্বে আসার পর থেকে দুদক বেশ নড়েচড়ে বসেছে বলে প্রেক্ষাপট মনে করে থাকে। তাই বলা হচ্ছে, সাধু সাবধান- ফসকা গিরো, বেড়া ও হাক্কা পাগলরা যেন ক্ষেত না খায়।
আজ সর্বত্রই ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের ছড়াছড়ি। যে উদাহরণের শেষ নেই। সহজে এ সমস্যার সমাধান জটিল ও কঠিন। তারপরও দায়িত্বশীলদের এ সমস্যার সমাধানে সামনে এগিয়ে যেতেই হবে। কোনো ভাবেই ও ধস ঃরৎবফ, ঁহধনষব ধহফ ঁহফড়হব অর্থাৎ ক্লান্ত, শ্রান্ত, অসমর্থ ও অপারগ বলে পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ একেবারেই পরাহত। এসব উক্তি যেমন প্রতিষ্ঠানকে দুর্বল করে তেমনি জনমনে হতাশা, ব্যর্থতার ধ্বনি, প্রতিধ্বনির ব্যাপ্তি ঘটাও অস্বাভাবিক কিছু নহে।
বর্তমান দুদুকের বড় সাফল্য হচ্ছে দুদকের অভ্যন্তরে শুদ্ধি অভিযান। যে কারণে দুদকের অনেকেই যেমন জেলে আছে তেমনি দুদকের অনেককে শুদ্ধাচার হতে সাবধান করে দেয়া হয়েছে। ইহাকে কোনো অবস্থাতেই হেয় করে দেখার আদৌ সুযোগ নেই। ইহার মূল উদ্দেশ্য হয়তো এটাই যাতে বেড়ায় ক্ষেত না খায়। ব্যুরো অব এ্যান্টি করাপশন আমলে এ সুযোগ ছিলনা বলেই অনেকেরই যেমন অপেন সিক্রেট দুর্নীতি করতো এবং রাঘব বোয়ালরাও পার পেয়ে যেত। এখন যেমন দুর্নীতির খবর জানানোর জন্য ১০৬ কমপ্লিন কোড চালু করা হয়েছে তখন এর বালাইও ছিলনা। ইহা দুদকের একটি সময়োচিত ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ হিসেবে সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্যতা রাখে। মন্দকে মন্দ বলা ও দোষকে অন্যায় বলার যে কারও অধিকার রয়েছে, তেমনি ভালো কাজের প্রশংসা, সমর্থন ও উৎসাহ প্রদানেরও যে কারও গণতান্ত্রিক অধিকার না থাকার কথা নয়।
০ টি.আর, কাবিখা, কাবিটার বেশীর ভাগই ভাগাভাগি ও লুটপাট করে গলাধঃ করণের ব্যাপারে জনশ্রুতি রয়েছে। যার চেইন অব কমান্ড নাকি ওপর থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তৃত। তেমনি রোডস এন্ড হাইওয়ে, পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি, গণপূর্ত, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল, শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগসহ অন্যান্য বিভাগের অপেন সিক্রেট দুর্নীতি নিয়েও রয়েছে জনশ্রুতি। কেউ হেনিয়াস অপকর্ম, দুর্নীতি করে বছরের পর বছর একই জায়গায় বহাল তবিয়তে থেকে অনেকেই পদোন্নতি পাচ্ছে, আবার অনেকেই যথাযথ পার্সেন্টিজের গড়মিলের কারণেও নাকি নাস্তানুবাদ হচ্ছে বলেও কম শুনা যায়নি। অনেকই মনে করে থাকে, এসব থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে দুদককে আরও সামনে এগিয়ে নেয়া উচিত। প্রতিনিয়ত গণমাধ্যম ও মিডিয়ায় ভূমি অফিস, পিআইও অফিস, সাব-রেজিস্ট্রি অফিস, শিক্ষা অফিস, স্বাস্থ্য অফিসসহ অন্যান্য অফিসে ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, বেসামাল ও লাগামহীন দুর্নীতির সংবাদ দেখলে মনে হয় দুদকের সাথে যেন ওরা কম্পিটিশন বা প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এছাড়া ব্যাংকিং সেক্টরে যে লাগামহীন দুর্নীতি চলছে তারতো কথাই নেই। যেন লুটেপুটে খাওয়ার চারণ ভূমি। তা না হলে ব্যাংকিং সেক্টরে এমন অনিয়ম, দুর্নীতি ও অরাজকতা হওয়ার কথা নয়।
জানা যায়, ০৯/০১/২০২০ ইং দুদক অভিযান চালিয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোঃ তাজুল ইসলামের কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা হাতে নাতে উদ্ধার করে থাকে। এই মর্মে ১০/০১/২০২০ ইং গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়ে থাকে। এসব দেখে অনেকেরই ধারণা দেশটা যেন দুর্নীতির আষ্টেপৃষ্টে চলে যাচ্ছে। তারপরও যে দুর্নীতির খবর বেড়–চ্ছে তা আরও ভয়াবহ। অবস্থা দৃষ্টে অনেকেই মনে করে কোথায়ও যেন ফসকা গিরো, বেড়া ও হাক্কা পাগলরা ক্ষেত খাচ্ছে। এসব যেন হাক্কা পাগলরা রসগোল্লা খাওয়ার কাহিনীরই নামান্তর।
কিছুদিন আগে একটি গণমাধ্যমে চিঠিপত্র বিভাগের সূত্র থেকে জানা যায়, কিছু সরকারি অফিসে প্রায় অনেক বছর ধরে ব্যবসা বাণিজ্যের লাইসেন্স, বন্দুকের লাইসেন্স, ইটভাটার লাইসেন্স, স্ট্যাম্প কার্টিজের লাইসেন্সসহ আর কিছু ব্যাপারে লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়নের সময় লোকাল অ্যারেঞ্জমেন্ট রিসোর্সের (এলএআর) নামে নির্দিষ্ট হারে রশিদের মাধ্যমে টাকা নেয়া হয়ে থাকে। তিনি আরও লিখেছেন এসব টাকা দেয়া এবং নেয়ার ব্যাপারে নাকি কোনো আইনী বৈধতা নেই। তিনি আরও লিখেছেন এসব অর্থের নাকি অডিটও হয়না। যা অবৈধ ও অনিয়ম হিসেবে বিবেচিত। যা দুর্নীতির পর্যায়ভূক্ত ও অপেন সিক্রেট দুর্নীতি হিসেবে গণ্য বলা চলে। ঢাক ঢোল পিটিয়ে এ প্রথাটি চালু হয়ে আসলেও দেখার কেউ নেই বলেও মন্তব্য করা হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন এসব দেখে যদি কোনো অভাজন ও ভূক্তভোগী হায়রে কপাল মন্দ, চোখ থাকিতে অন্ধ ও কানার হাট বাজার বলে মন্তব্য করে থাকে তবে ভূক্তভোগী এই অভাজনকে বলার সুযোগই বা কোথায় ? আর যদি হাক্কা পাগলের রসগোল্লা খাওয়ার ঘটনা কোনো বেরসিক এখানেও টেনে আনে তাতেই বলার সুযোগ কোথায় ?
বর্তমান দুদুককে নিয়ে কে কিভাবে ভাবছে তা জানার সুযোগ না থাকলেও, দুর্নীতির হোতা, গডফাদার, গডব্রাদার, নাটের গুরু, রাঘববোয়াল, দানব, রাক্ষস, ইবলিশ ও নরপিশাচদেরকে কোনো ভাবেই কারও ভালো চোখে না দেখারই কথা। তারপর বর্তমান দুদক ও দুদক চেয়ারম্যান শত প্রতিকুলতার মধ্যেও অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুর্নীতিকে যে জায়গায় নিতে চাচ্ছে এটাও কম কথা নয় বলে অনেকেই মনে করে থাকে। এবারের দুদক যদি কোনো কারণে পিছু হটে এবং ও ধস ঃরৎবফ, ঁহধনষব ্ ঁহফড়হব বলে বিদায় নেয় তবে দুঃখ, বেদনা, অনুশোচনার কিছু অবশিষ্ট না থাকারই কথা। এমনকি হাক্কা পাগলরা তখন রসগোল্লার হাঁড়ি নিয়ে বসলেও বলার সুযোগ নাও থাকতে পারে। কাজ করলে আলোচনা, সমালোচনা হবেই। বোকার যেমন শত্রু নেই তেমনি কাজ না করলে আলোচনা, সমালোচনা হয় না। পাছে লোক কিছু বলে তা কর্ণপাত না করে দেশ, জাতি, জনগণের স্বার্থে দুর্নীতির বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাওয়াই মুখ্যম বলে অনেকেই প্রত্যাশা করে থাকে।
অনিয়ম দুর্নীতি করোনা ভাইরাসের মতো মারাত্মক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি নেই এমন প্রতিষ্ঠানের যেমন আজকাল দুস্কর তেমনি সাধু বাবাদেরও আকাল। এ ব্যাপারে উদাহরণেরও শেষ নেই। এক লোক প্রতিদিন ঘুষ খেতে অভ্যস্থ ছিল। যেদিন ঘুষ পেত না সেদিন যেমনি তার মন খারাপ থাকতো তেমনি কর্মস্থল থেকে ফিরে এসে অহেতুক স্ত্রীকে বকাঝকা ও নির্যাতন চালাত। আর যেদিন ঘুষ পেত সেদিন তার আনন্দ উল্লাসের শেষই থাকতনা। এমনিভাবে তার স্ত্রী এসব জ্বালা যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করে থাকে। পরে ঘটনার আদ্যোপান্ত জানাজানি হলে ঘুষখোর স্বামীকে পুলিশে দিলে রিমান্ডে সব গোমড় ফাঁস হয়ে যায়। এতে দেখা যায়, দুর্নীতিবাজরা নাকি এক সময় জলাতংক রোগীর মতো হয়ে যায়। তাদের হিতাহিত কোনো জ্ঞান থাকে না। ওদের যেমন লজ্জা শরমের বালাই থাকে না, তেমনি ঘুষ, দুর্নীতি ছাড়া ওদের মাথায় অন্য কিছু ঢুকে না। ওদের কোনো জাত নেই, ধর্ম নেই, দর্শন নেই। ওদের মাথায় একটাই ভূত তা হচ্ছে টাকা আর টাকা। ওদের কাছে টাকা মধুর চেয়ে মিষ্টি অর্থাৎ গড়হবু রং নবঃঃবৎ ঃযধহ যড়হবু। ঘুরে ফিরে বারবার ক্যাসিনোর কথাই চলে আসে। যা থেকে ইচ্ছা করলেও কলমকে সরিয়ে রাখা যায় না। ক্যাসিনোর গড ফাদাররা নাটের গুরু হাক্কা পাগলদের নাম বললেও আজও অনেকেই ধরা ছোঁয়া ও তদন্তের বাইরে থাকাতে গণমাধ্যমসহ চায়ের টেবিলে আলোচনা, সমালোচনা একেবারে কম লক্ষ্য করা যায়নি। অনেকেরই আশংকা টাঙ্গাইলের পাটকল শ্রমিক জাহালামের মতো নতুন কিছু যাতে দৃশ্যপটে এসে না যায়।
যদি দুদক ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা ওদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করে কিশোরগঞ্জের জেলা ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা সেতুফুলের ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলার অভিযোগ নামার মতো ফসকা গিরো হয়ে যায়, এ ব্যাপারে প্রশ্ন উঠলে সদোত্তর দেয়ার মতো সুযোগ হয়তো নাও থাকতে পারে। সূত্রে জানা যায়, এ মামলাটির পুণরায় তদন্তের (জব ওহাবংঃরমধঃরড়হ) জন্য নাকি কিশোরগঞ্জের বিচারিক আদালত দুদকে পাঠিয়েছেন। দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও অভিপ্রায় দুর্নীতির লাগামকে যেন আরও শক্ত হাতে ধরা হয়। দুদকের দরকার চোখ কান খোলা রেখে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলা। কোনো রাখ, ডাক বাধা যেন স্পর্শ করতে না পারে। দুদক একটি স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। হারানোর কিছু নেই। ব্যুরো অব এন্টি করাপশন সাকো ও ডাকোকে নিয়ে আজও যে আলোচনা, সমালোচনা ও ভুল বুঝাবুঝি রয়েছে, দুদক চেয়ারম্যান হাসান মশহুদ চৌধুরীর বিদায় বেলার হাতাশার উক্তি নিয়ে যে আলোচনা আজও হয়ে থাকে দেশের মানুষ এসবের পুনরাবৃত্তি আর জানতে, শুনতে ও দেখতে চায় না।
দুর্নীতির বিরুদ্ধে এত ঢাকঢোল, প্রত্যাশার পরও যদি কোনো কারণে ফসকা গিরো, বেড়া ও হাক্কা পাগলরা ক্ষেত খায় ও রাঘব বোয়ালা যদি ধরা ছোঁয়ায় বাইরে থেকে বিচরণ করে আর যদি জারি, সারি, ভাটিয়ালি ও পল্লীগীতির সুরে মাঝি কোথায় চলছ বাইয়া, এসব দেখি হাক্কা পাগল ও কানার হাট বাজার তবে হয়তো বলার কিছু নাও থাকে পারে।
পরিশেষে নিবন্ধের শিরোনাম টেনে আবারও বলতে হচ্ছে, সাধু সাবধান- ফসকা গিরো, বেড়া ও হাক্কা পাগলরা যেন ক্ষেত না খায়। দুদকের কথা, কাজ, প্রতিশ্রুতির সমন্বয় ও সাফল্যই জনপ্রত্যাশা। এছাড়া দুদকের প্রতি দেশের মানুষের যে আস্থা সৃষ্টি হয়েছে, যাতে দুর্বার গতিতে সামনে এগিয়ে চলে তাও কম প্রত্যাশা নহে।
(এ.কে.এম শামছুল হক রেনু)
লেখক কলামিষ্ট