গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার অর্থশতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার। প্রতি বছর কলাগাছ ও বাঁশ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রীরা যথাযোগ্য মর্যাদায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস পালন করে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার শহীদ মিনার না থাকার কারণে শুধু আলোচনা সভার মধ্যে দিয়ে দিবসের কর্মসূচি পালন করে থাকে। এ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ এখন সময়ের দাবি হয়ে দাড়িয়েছে।
উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কার্যালয় তথ্যসুত্রে জানাগেছে, এ উপজেলায় ২৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫টি মাদ্রাসায় শহীদ মিনার নেই। এছাড়াও প্রায় ২০টি ছোট বড় কিন্ডারগার্টেনেও শহীদ মিনার নেই।
তবে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের এই তথ্য মানতে নারাজ একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, কোটালীপাড়া উপজেলার অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে স্থায়ী শহীদ মিনার নেই। এ সকল বিদ্যালয়ে কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ নির্মাণ এখন সময়ের দাবি হয়ে দাড়িয়েছে।
ভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে সরেজমিনে গিয়ে উপজেলার ৮০ নং কুরপালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও নির্মল সেন স্কুল এ্যান্ড মহিলা কলেজে কলা গাছ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করে শহীদ দিবস পালন করতে দেখা গেছে।
৮০ নং কুরপালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মৌরিন রহমান মৌ ও তাসকিন হাসান নাবিল বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে স্থায়ী শহীদ মিনার নেই। প্রতি বছর আমরা কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করে তাতে ফুল দিয়ে ৫২’র ভাষা আন্দোলনে নিহত শহীদরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আমরা চাই আমাদের বিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার হোক।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক নুরুন নাহার শিউলী বলেন, বিদ্যালয় শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য সরকারি কোন বরাদ্ধ নেই। আমি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও এলাকাসীর সঙ্গে শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়ে আলোচনা করেছি। আগামী বছর ভাষা দিবসের আগে আমরা এখানে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করবো।
নির্মল সেন স্কুল এ্যান্ড মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সাংবাদিক রতন সেন কংকন বলেন, আমি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি নতুন নির্মাণ করেছি। অর্থের অভাবে শহীদ মিনার নির্মাণ করতে পারিনি। তবে আগামী মুজিববর্ষে আমি আমার বিদ্যালয়ে একটি স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণ করবো।
বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি কোটালীপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক কাজী সাফায়েত হোসেন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়গুলোর যখন নতুন ভবন নির্মাণ করা হয় তখন ইষ্টিমিটে একটি শহীদ মিনার ধরা থাকলে সরকারের তেমন কোন বরাদ্দ বাড়ে বলে আমি মনে করিনা। তাই আমি চাইবো আগামীতে যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন হবে সে সকল ভবনের ইষ্টিমিটে যেন শহীদ মিনার নির্মাণের অর্থ ধরা থাকে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাবুবুর রহমান ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অরুন কুমার ঢালী বলেন,
আমাদের সে সকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই আমরা মুজিববর্ষে সে সকল বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করবো।