ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের মধ্যে রয়েছে কোর্স কোডিনেটর হিসেবে দ্ইু ব্যাচ থেকে সন্মানি এবং খাবার ভাতা টাকা উত্তোলন, অফিস সহায়কের ভূয়া নাম দিয়ে বিল উত্তোলন, প্রশিক্ষণে শিক্ষকদের নিন্মমানের ব্যাগ ও উপকরণ বিতরণ করে অর্থ আত্মসাৎ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বীর ২০১৭ সালের ২৪ জানুয়ারি গফরগাঁও উপজেলায় যোগদান করেন। তিনি ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে গফরগাঁওয়ে যোগদানেরর পর থেকেই কর্মস্থলে নিয়মিত অনুস্থিতসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে। প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান্নোয়নের জন গত বছরের ১ডিসেম্বর পিইডিপি-৪এর অধীনে বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষ শুরু হয়। প্রশিক্ষনের আয়োজক উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি)।প্রশিক্ষনে বাংলা তিন ব্যাচে-৯০জন, ইংরেজী-৯০জন, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সাত ব্যাচে-২১০ জন, প্রাথমিক বিজ্ঞান সাত ব্যাচে-২১০জন করে প্রশিক্ষনার্থী অংশগ্রহণ করেন। যাহা এখন চলমান রয়েছে। প্রশিক্ষনে প্রতি ব্যাচের প্রশিক্ষনার্থীদের জন্য উপকরণ বাবদ ৩০ টাকা বরাদ্ধ থাকলেও ৫ টাকা মূল্যের বলপেন, ৫ টাকা মূল্যের খাতা প্রদান করে বাকি টাকা আত্মসাৎ করছেন তিনি। প্রশিক্ষনার্থীরা জানায়, ৩০ জানুয়ারি থেকে বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষন বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় প্রথম ব্যাচ এবং একই দিনে একই ভ্যানুতে অনুষ্ঠিত প্রাথমিক বিজ্ঞান দ্বিতীয় ব্যাচ প্রশিক্ষণেই কোর্স কো-অর্ডিনেটর হিসেবে ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বী ৬’শ টাকা সম্মানী এবং ২’শ ৮০ টাকা খাবার ভাতা টাকা উত্তোলন করেন। অপর দিকে একই দিনে একই ভ্যানুতে অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষনের দুই ব্যাচেই অফিস সহায়ক হিসেবে শফিকুল ও মাহফুজ ভূয়া নাম দিয়ে বিল উত্তোলন করেন ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বীর। অথচ উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসিতে) শফিকুল ও মাহফুজ নামে কোন অফিস সহায়ক হিসেবে এখানে কর্মরত নেই। যা পরিপত্রের অর্থনৈতিক অনিয়ম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিসোর্স সেন্টারের (ইউআরসি) কর্মরত জনৈক ব্যক্তি জানান, ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বী গফরগাঁও উপজেলা যোগদানের পর থেকেই অর্থনৈতিক এসব অনিয়ম এখন নিয়মে পরিনত করেছেন। অপর দিকে প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহনকারী শিক্ষকদের অভিযোগ, সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত প্রশিক্ষন কার্যক্রম চললেও ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বী প্রতিদিন ময়মনসিংহ হতে ব্রহ্মপুত্র ট্রেন যোগে সকাল সাড়ে ১০টা অফিসে আসেন এবং দুপুরে আন্তঃনগর অগ্নিবীনা ট্রেনে আবার বাসায় চলে যান। উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষনে প্রশিক্ষক ডেপুটেশনের বিধান উপজেলা শিক্ষা অফিসের। শিক্ষা অফিস তালিকা প্রদানের পর ইউআরসি শুধু প্রশিক্ষনের আয়োজন করবেন। কিন্তু এসবের কিছুই মানা হচ্ছেনা। প্রশিক্ষনে প্রশিক্ষক ডেপুটেশনের জন্য ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বীর উল্টো উপজেলা শিক্ষা অফিসে তালিকা প্রেরণ করেন। শিক্ষকদের অভিযোগ, তিনি প্রশিক্ষনে অংশ গ্রহনকারী প্রশিক্ষনার্থীদের মাঝে ৫’শ টাকা মূল্যের ব্যাগ বরাদ্ধ থাকলেও ২৫০-৩০০ টাকা দামের ব্যাগ সরবরাহ করে টাকা আত্মসাৎ করছেন।
এ ব্যাপারে ইউআরসির ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বীর অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, অফিসে লোকবলের স্বল্পতা রয়েছে। অফিস চালাতে গিয়ে সাপোর্ট সার্ভিসের জন্য বাহির থেকে লোক এনে কাজ করতে হচ্ছে।
ইন্সট্রাক্টর জবানুর রাব্বীর অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে মুঠো ফোনে কথা হয় ময়মনসিংহ সুপারিটেন্ডন্ট (পিটিআই) রকিবুল ইসলাম তালুকদারের সাথে। তিনি জানান, কোর্স কো-অর্ডিনেটর হিসেবে জবানুর রাব্বীর শুধু মাত্র একটি ব্যাচ থেকে আর্থিক সুবিধা গ্রহন করতে পারবেন। সাপোর্ট সার্ভিসের জন্য ভূয়া নাম দিয়ে বিল উত্তোলন করা হচ্ছে কি না তা তদন্ত করে দেখা হবে।