জনগণের দোড়গোড়ায় সেবা পৌছে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার স্থাপন করা হলেও নাটোরের সিংড়ার শুকাস ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মোঃ রেজাউল করিম ব্যবসা খুলে বসেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখানে অর্থের বিনিময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদের বয়স কম-বেশি করাসহ মোটা অংকের অর্থ হলেই মিলে শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদপত্র ও বিভিন্ন বিষয়ের অভিজ্ঞতার সনদ।
সরোজমিনে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শুকাস ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবণে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র। কম্পিউটারে স্থানীয় বেলোয়া দ্বি-মুখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্যাড তৈরি করে প্রকাশ্যে ডুপ্লিকেট সীল ও স্বাক্ষর দিয়ে অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদ বানিয়ে দিচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন সেবাপ্রার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থও হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। ঘটনাটি এই প্রতিবেদকের ক্যামেরা বন্দি হয়ে হতভম্ব হয়ে যান ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মো: রেজাউল করিম। সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকদের হাতে-পায়ে ধরার চেষ্টাও করেন তিনি।
এসময় উপস্থিত এলাকাবাসীরা অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র বানিয়ে বিক্রয় করছেন উদ্যোক্তা রেজাউল করিম। এছাড়াও বিভিন্ন ছোটখাটো কাজেও অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয় সেবাপ্রার্থীদের।
এবিষয়ে অভিযুক্ত শুকাস ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা মোঃ রেজাউল করিম বলেন, তিনি কোন কাজে অতিরিক্ত অর্থ নেন না। তবে একজন স্থানীয় ইউপি সদস্যের অনুরোধে এই প্রথম ৩টি অষ্টম শ্রেণি পাশের সনদপত্র তৈরি করে দিয়েছেন স্বীকার করে বলেন, এই কাজটি অন্যায় করেছেন আর এর জন্য ক্ষমাও চান।
শুকাস ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মোঃ আবদুল লতিফ বলেন, এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। ইন্টারনেট সংযোগের কারণে ইউনিয়নের ডিজিটাল সেবা সেন্টারটি পুরাতন ভবণে অবস্থিত। আর তিনি নতুন ভবনে বসেন, তাই বিষয়টি তার জানা নেই। আর ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আবদুল মজিদ’রও একই ভাষ্য।
এবিষয়ে বেলোয়া দ্বি-মূখী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আনোয়ার হোসেন বলেন, তার স্কুলের সীল-প্যাড বানিয়ে শিক্ষাগত যোগতার সনদ বিক্রয়ের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ নাসরিন বানু এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
নাটোরের ডিডিএলজি গোলাম রাব্বি বলেন, ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র বানিয়ে বিক্রয় করা নিঃসন্দেহে একটি অবৈধ কাজ। খোঁজ নিয়ে বিবি মোতাবেক ব্যবস্থা নিবেন।