ডিম বিক্রেতা পথশিশু সিয়ামের লেখা পড়ার দায়িত্ব নিলো ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
জানা যায়, গফরগাঁও পৌর শহরের রাঘাইচটি গ্রামের স্বামী পরিত্যক্তা লাভলী খাতুনের শিশুপুত্র সিয়াম। ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে নিয়ে লাভলী খাতুনের বড় সংসার। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছে। ৩ ছেলে ও ১ মেয়ে নিয়ে সিয়ামের মা ভাড়া বাড়ীতে থাকেন। তার দুই ভাই ট্রেনে পানি বিক্রয় করে আর সিয়াম রাতে ডিম বিক্রয় করে। পানি আর ডিমের ফেরি করে চলে তাদের সংসার। সিয়ামের মা প্রতিদিন ডিম সিদ্ধ করে সিয়ামকে গফরগাঁও বাজারে পাঁঠায়। ডিম বিক্রি করে যত টাকা লাভ হয় তা থেকে সিয়ামকে ১০ টাকা করে দেয়। এই টাকা দিয়ে সিয়াম রাতে শখ করে পরোটা খায়। ডিম বিক্রি করতে সিয়াম একদিন কলেজ রোডস্থ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির অফিসে আসে। এ সময় নজরে আসে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেলিমের।
কৌতুহলী হয়ে সেলিম তাকে প্রশ্ন করলে সে জানায়, তার মা সংসারের খরচ চালিয়ে তার লেখাপড়ার খরচ দিতে পারে না। তাই সে স্কুলে যায় না। সিয়ামের কাছ থেকে তাঁর মায়ের মোবাইল নাম্বার নিয়ে কথা বলে সিয়ামকে বাতেনীয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেয়। জাহাঙ্গীর আলম সেলিম জানায়, সিয়ামের স্কুল ড্রেস, জুতা, খাতা-কলম সহ আনুষঙ্গিক সব খরচ বহন করবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ।
শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিয়ামের হাতে নতুন বই খাতা ও স্কুল ড্রেস তুলে দেন ইউআরসি ইনস্ট্রাক্টর জবানুর রাব্বী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেলিম, কান্দিপাড়া শাখার সভাপতি রফিকুল ইসলাম ও বাতেনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিক। নতুন স্কুল ড্রেস, বই, খাতা ও কলম পেয়ে সিয়াম জানায়, স্কুলে ভর্তি হতে পেরে আমি খুব খুশি হয়েছি। আমি আমার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাই।