এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি বলেছেন, ইসলাম প্রচারে আলেম ওলামাদের গুরত্ব অপরিসীম। তাই কোরআন ও হাদিসের আলোকে মুসলমানদের ইসলাম প্রচারে আলেম ওলামারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে অগ্রনী ভূমিকা রাখতে হবে। কিন্তু বর্তমানে আমরা আলেম ওলামাদের বিভিন্ন রকম স্ববিরোধী বক্তব্য শুনতে পাই। একেক আলেম একেক ধরণের কোরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যা দিচ্ছে। আলেমরাই আলেমদের বিরোধীতা করছে এবং অপবাদ দিচ্ছে। এতে করে আমরা সাধারণ মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়ছি। বিবেদ আমাদেরকে ভিতর থেকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তিনি আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বলেন, মুসলমান রাষ্ট্র হলেও একেক রাষ্ট্র একেক পক্ষ অবলম্বন করছে। সারা পৃথিবীতে মুসলমানদের উপর যে দুর্ভোগ-দুর্গতি তার কারণ বিশ্লেষন করলে দেখা যায়, আমাদের নিজেদের চরিত্রের মধ্যে ঘাটতি রয়েছে। মুসলমানই মুসলমানদের ক্ষতি সাধন করছে। অন্যান্য ধর্মালম্বী লোকেরা উসকে দিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে। আজকে ইসলামিক দেশ ও সংগঠন গুলোতে দক্ষ নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। আলেম ওলামাদের সঠিক দিক নির্দেশনা ছাড়া ইসলামের দায়-দায়িত্ব পালন করা প্রায়ই অসম্ভব। তিনি মুসলমানদের বিবেদ সৃষ্টি না করার জন্য সকল আলেম ওলামাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
আলহাজ্ব ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন এমপি শুক্রবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন ঐতিহ্যবাহী সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের ৮৭’তম বার্ষিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিলে বক্তব্য রাখতে এসব কথা বলেন। দরবার শরীফের পীর অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুর রহমানের সভাপতিত্বে মাহফিলে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ম. রুহুল আমিন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের পরিচালক শাহ্ আলম। কোরআন ও হাদিস থেকে বয়ান করেন মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী, বাংলাদেশ তা’লীমে হিযবুল্লাহ’র নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা বেলাল হোসেন আফসারী, দুর্বাটি এম.ইউ কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন আজিজী, মাদরাসার মুফাসসির মাওলানা রফিকুল ইসলাম যশোরী, মাওলানা নেছার আহাম্মদ চাঁদপুরী, সৈয়দপুর কামিল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুজিবুর রহমান, দরবারের বিশিষ্ট খলিফা মাওলানা আবুবকর সিদ্দিক, মুফতী শাহ্আলম।
সোনাকান্দা দারুল হুদা বহুমুখী কামিল মাদরাসার প্রধান মুহাদ্দিস শায়খুল হাদিস মাওলানা মোতালিব হোসাইন ছালেহীর নান্দনিক উপস্থাপনায় মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন ফুরফুরা দরবার শরীফের পীর মাওলানা মতিউল্লাহ সিদ্দিকী, সৈয়দপুর কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ ও নূর মোহাম্মদ দরবার শরীফের পীর মাওলানা আবু তাহের ছালেহ উদ্দিন, মুক্তারামপুর দরবার শরীফের পীর মাওলানা মেছবাহ উদ্দিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব হারুণ আল রশীদ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল কালাম আজাদ তমাল, জেলা পরিষদ সদস্য ভিপি জাকির হোসেন ও ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
মঙ্গলবার বাদ ফজর আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের পীর ও বাংলাদেশ তা’লীমে হিযবুল্লাহ’র আমীর আলহাজ্ব মাওলানা মাহমুদুর রহমান। শেষদিনের এই আখেরী মোনাজাতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ঢল নামে। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের আশায় সারা বাংলার প্রত্যন্ত এলাকা থেকে মাহফিলে প্রচুর লোক সমাগম হয়। নিজের ও আহল আওলাদের গুনাহ খাতা মাফির জন্য এবং দেশ-জাতির ইহকালীন ও পরকালীন কল্যাণ কামনা করে আখেরী মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। মোনাজাতে কান্নার রোল পড়ে যায়। মহান আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি আর আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিতে মাহফলি ও আশ-পাশের এলাকার পরিবেশ ছিল লক্ষণীয়। দরবারের আশিকীন, যাকেরীন, মুহিব্বীন ও খলিফাবৃন্দসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য ওলামায়ে কেরাম, দেশ-বরেণ্য পীর-মাশায়েখগণসহ সামাজিক ও বিভিন্ন পেশাজীবীর লোকজন মোনাজাতে উপস্থিত ছিলেন।